মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ইলিশ রপ্তানির উদ্যোগ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ পিএম
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ইলিশ রপ্তানির উদ্যোগ

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ইলিশ রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ-আমেরিকায় আমাদের প্রবাসীরা আছে। এর মধ্যে ইউরোপ-আমেরিকায় যেসব এলাকায় আমাদের বাঙালিরা আছে সেখানে কিছু ইলিশ যায়। এখন আমরা মধ্যপ্রাচ্যে ইলিশ রপ্তানির উদ্যোগ নেব।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা হিসেবে ১০০ দিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এ বছর ইলিশ মাছের আহরণ গত বছরের তুলনায় কম ছিল। তার একটি অন্যতম কারণ ছিল সময়ে বৃষ্টি না হওয়া। তাছাড়া ভারত থেকে অবৈধভাবে ট্রলার ফিশিংয়ের মাধ্যমে ইলিশ আহরণ করা হয় বলে অভিযোগ আছে। তবে এ বছর আমাদের নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড এবং নৌ পুলিশ এ বিষয়ে সতর্ক অভিযান চালিয়েছে এবং বেশ কিছু ভারতীয় ট্রলার এবং জেলে আটক করতে পেরেছে। তবে বাজারে ইলিশের দাম কেজি প্রতি ১৫০০ টাকা থাকায় এখনো সাধারণ মানুষের চাহিদা মেটাতে পারছে না। ইলিশের দামের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট এবং মধ্যস্বত্বভোগী এবং দাদন-ব্যবসাকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে।

এবারের মা ইলিশ রক্ষার অভিযান সফল হয়েছে জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ইলিশের ডিম ফোটার হার ছিল গড়ে ৫৪ শতাংশ কোথাও ৭০ শতাংশেরও বেশি হয়েছে। ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় বিগত তিন মাসে (আগস্ট-অক্টোবর) ১,৪২৪টি ইলিশ আহরণকারী জেলে পরিবারের মধ্যে বিকল্প আয়ের উপকরণ (এআইজি) বিতরণ এবং ১,৮২৫ জন সুফলভোগী ইলিশ জেলেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশের ডিম ছাড়া নির্বিঘ্ন করতে প্রতি বছরের মতো  এবছরও ১৩ অক্টোবর ২০২৪ থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত, ক্রয়-বিক্রয়, বাজারজাতকরণ বন্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি, মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

'মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪' এর আওতায় মোট ২ হাজার ১৬৫টি মোবাইল কোর্ট ও ৯ হাজার ৮০২টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব মোবাইল কোর্ট ও অভিযানের মাধ্যমে ৫৪.৮৪ টন ইলিশ জব্দ, ৬১১.৬৩৮ লাখ মিটার জাল আটক, ৩ হাজার ২৫টি মামলা দায়ের, ৭৫.২৭৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং ২ হাজার ৯ জনকে জেল দেওয়া হয়েছে।

অভিযান চলাকালীন জেলেদের জন্য মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য এবছর মোট ১৪১৬৪.১২৫ টন চাল ৫৬৬৫৬৫টি জেলে পরিবারের মাঝে বরাদ্দ করা হয়েছে যার মধ্যে ১৩৯৬২.১ টন চাল ৫৫৬৫৬০টি জেলে পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে (বিতরণের হার ৯৯ শতাংশ)। আগামীতে ৪০ কেজি মাসিক ভিজিএফ এর পরিবর্তে ৫০ কেজি এবং ২৫ কেজি এর পরিবর্তে ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং সব জেলে যাতে সরকারের সুবিধা পেতে পারে তার জন্য জেলেদের তালিকা হালনাগাদ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ইলিশ রক্ষার জন্য অবৈধ জাল আটক এবং কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। মুন্সিগঞ্জে কারখানায় অভিযান চালিয়ে ২৪.৯০ লাখ মিটার এবং ৬৬০০ পিস রেইল আটক করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত আছে। এবং কারখানাগুলো বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। ইলিশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে গত ১০ বছর ধরে। তবুও দুর্গাপূজার সময় ৩৯৫০ টন রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও ভারতে গেছে মাত্র ৬৬৫ টন।