1. হোম
  2. জাতীয়

শুটার ফয়সালের যে প্রস্তাবে রাজি হওয়াই কাল হলো হাদির

Staff Reporter
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
ঢাকা
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩২ পিএম
শুটার ফয়সালের যে প্রস্তাবে রাজি হওয়াই কাল হলো হাদির

জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার নেপথ্যে একটি পেশাদার শুটার দলের সক্রিয়তার তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাদির সঙ্গে শুটার সখ্যতা তৈরি থেকে শুরু করে হত্যাকাণ্ড এবং আলামত ধ্বংস—সবকিছুই করা হয়েছে একটি সুপরিকল্পিত ছক অনুযায়ী।

যেভাবে ছক সাজানো হয়:

সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যে এই সুপরিকল্পিত হত্যার ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে।

৪ ডিসেম্বর রাত ৮টা ১৮ মিনিটে শুটার ফয়সাল ও তার সহযোগী কবির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে হাদির সাথে সাক্ষাৎ করে তার হয়ে কাজ করার প্রস্তাব দেন। এটি ছিল হাদির দলে প্রবেশের প্রথম ধাপ। সেই প্রস্তাবে রাজি হন হাদি। কেই বা জানতো সে সময় যে হাদি নিজে তার মৃত্যুমঞ্চের ভিত্তিপ্রস্তর সে সময় স্থাপন করে বসেছিলেন নিজ হাতেই?  

৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ফয়সাল ও আলমগীর হাদির সাথে বৈঠক করেন এবং নির্বাচনী প্রচারণার পরিকল্পনায় অংশ নেন। ১০ ডিসেম্বর তারা সেগুনবাগিচায় সরাসরি হাদির হয়ে প্রচারণায় নামেন।

এরপর ১২ ডিসেম্বর পল্টন এলাকায় হাদির ওপর প্রাণঘাতী আক্রমণ চালায় ফয়সাল ও আলমগীর। সখ্যতা তৈরির মাত্র সাত দিনের মাথায় হাদির ওপর হামলা চালানো হয়।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, মূল ঘাতক ফয়সাল ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই আলামত গায়েব করে গা ঢাকা দেয়।

হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ভারত পালিয়ে গেছেন—এমন গুঞ্জন থাকলেও পুলিশ তা নিশ্চিত করেনি।

রোববার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফয়সাল দেশ ছেড়েছে এমন কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য আমাদের কাছে নেই। অপরাধীরা প্রায়ই বিভ্রান্তি ছড়াতে ভুল তথ্য প্রচার করে। তবে তাকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে সব বাহিনী কাজ করছে।’

ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান (ডিবি) শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা নয়, বরং বড় কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকার জোরালো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত বুলেটের সূত্র ধরে তদন্ত ও নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া আলটিমেটাম অনুযায়ী ২ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় সোমবার বিক্ষোভ সমাবেশ করার ডাক দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। এর আগে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তারা। তাদের অভিযোগ: শ্যুটআউটের মূল হোতাদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই ও সিভিল ও মিলিটারি গোয়েন্দা সংস্থায় থাকা সাবেক সরকারের দোসরদের অপসারণ বা গ্রেপ্তারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সংগঠনটি জানিয়েছে, সোমবারের সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা পরবর্তী আন্দোলনের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।