প্লট-ফ্ল্যাট হস্তান্তরে লাগবে না রাজউক কিংবা কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমতি

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০২ পিএম
প্লট-ফ্ল্যাট হস্তান্তরে লাগবে না রাজউক কিংবা কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমতি
ছবি- সংগৃহীত

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের অধীনে উন্নয়নকৃত আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাট হস্তান্তরে কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে না। একটি নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে সাব-রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে নিবন্ধন করে জমি বা ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা যাবে।

রোববার (১০ নভেম্বর) গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, দেশের আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাট হস্তান্তর ব্যবস্থাকে সহজীকরণ, লিজগ্রহীতাদের দুর্ভোগ ও হয়রানি লাঘব এবং দুর্নীতি দূরীকরণের লক্ষ্যে বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

অনুমোদন প্রক্রিয়া সরলীকরণ

আগে আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের দলিল সম্পাদনের জন্য লিজদাতাপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদন অপরিহার্য ছিল।

নতুন প্রজ্ঞাপনের ফলে উত্তরাধিকার, ক্রয়, দান, হস্তান্তর (বিক্রয় বা বণ্টন) সংক্রান্ত দলিল সম্পাদনের জন্য কোনো অনুমোদন গ্রহণের প্রয়োজন থাকবে না।

তবে প্লটের বিভাজন বা একত্রীকরণ এবং মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ব্যবহার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণের নিয়ম আগের মতোই বজায় থাকবে।

দলিল মূল্য অনুসারে হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ফ্ল্যাটের জন্য ২ শতাংশ এবং প্লটের জন্যশতাংশ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা সরাসরি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দিতে হবে। এ ফি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত অর্থনৈতিক কোড অনুসারে নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (এনটিআর) হিসেবে আদায় করা হবে।

দলিল ও রেকর্ড জমা

হস্তান্তরের পর দলিলের এক কপি এবং নামজারি সংক্রান্ত সব নথি ৯০ দিনের মধ্যে লিজদাতাপ্রতিষ্ঠানে জমা দিতে হবে। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা না দেয়া হয়, তবে দৈনিক ৫০ টাকা জরিমানা, সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ধার্য হবে।

এই রেকর্ডপত্র রেজিস্টারড ডাক বা ই-মেইল ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক মাধ্যমের মাধ্যমে ক্রেতাকে প্রদান করা হবে।

লিজ মেয়াদ শেষ ও স্বয়ংক্রিয় হস্তান্তর

নির্ধারিত লিজ মেয়াদ (৯৯ বছর) শেষ হওয়ার পর হস্তান্তর স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে এবং দলিল ফি বা আর কোনো অর্থ প্রদান বাধ্যতামূলক হবে না। তবে প্লট বিভাজন বা মাস্টারপ্ল্যান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পূর্বানুমোদন অবলম্বন করতে হবে।

প্রাতিষ্ঠানিক, বাণিজ্য ও শিল্প প্লটের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নিয়ম বহাল থাকবে। আবাসিক ব্যতীত অন্যান্য সম্পত্তির ক্ষেত্রে লিজদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন প্রক্রিয়া আগের মতোই কার্যকর থাকবে।

যে প্লট বা ফ্ল্যাটে মালিকানা বিরোধ রয়েছে বা পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত বা বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে (জানুয়ারি ২০০৯ থেকে জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত), সেগুলোর ক্ষেত্রে বিদ্যমান অনুমোদন প্রক্রিয়া বহাল থাকবে। তবে দলিল ফি প্রদানের নিয়ম এখানে প্রযোজ্য হবে।

দ্রুততর তালিকা প্রকাশ

প্রকাশিত বিধান অনুসারে, কোনো কোনো আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাটে অনুমোদন ছাড়াই হস্তান্তর সম্ভব। সেই তালিকা যথাসম্ভব দ্রুত প্রকাশ করা হবে। প্রকাশিত তালিকায় যদি কোনো ভুল বা ত্রুটি থাকে, সংশোধনের ক্ষমতা কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করবে।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রজ্ঞাপনটির মূল লক্ষ্য হলো লিজগ্রহীতাদের হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা, আবাসিক সম্পত্তি ব্যবস্থাপনাকে স্বচ্ছ ও দ্রুত করা ও দুর্নীতি ও অনিয়ম দূরীকরণ।

প্রজ্ঞাপনটি কার্যকর হওয়ার পর সরকারের স্বার্থে বিরোধপূর্ণ বা পরিত্যক্ত সম্পত্তি দ্রুত ব্যবহারযোগ্য হবে। লিজগ্রহীতাদের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হবে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে দলিলপ্রক্রিয়া সহজতর হবে এবং নথি সংরক্ষণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনলাইন ও ইলেকট্রনিক ফরম্যাটে নিশ্চিত হবে।