অনলাইন জুয়া বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ অন্তর্বর্তী সরকারের
অনলাইন জুয়া বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিষয়টি নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে অনলাইন গণমাধ্যমসহ যেসব সাইটে জুয়ার বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে, সেগুলো ব্লকসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে নড়েচড়ে বসেছেন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষও।
সর্বশেষ উদ্যোগ হিসেবে অনলাইনে জুয়ায় জড়িত ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বর শনাক্ত করে তাদের ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বিকাশের মাধ্যমে অনলাইন বেটিংয়ে পেমেন্ট করলে সংশ্লিষ্ট বিকাশ নম্বরও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সভাকক্ষে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় অনলাইন জুয়া নিয়ন্ত্রণে নতুন পদক্ষেপের বিষয়টি জানানো হয়।
সভায় অংশ নেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসির কর্মকর্তা ছাড়াও বিকাশ ও বিভিন্ন পেমেন্ট সিস্টেম এজেন্সির প্রতিনিধিরা। তারা অনলাইনে জুয়া কার্যক্রম প্রতিরোধে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করা ও লেনদেন বন্ধের মতো পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, অনলাইন জুয়ায় জড়িত প্রায় ৫ হাজার এমএফএস (মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস) হিসাব এরই মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকার এখন একটি কমন ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা, প্ল্যাটফর্ম ও অপারেটরদের সমন্বয়ে তথ্য সংরক্ষণ ও নজরদারি করা হবে।
বিশেষ সহকারী বলেন, যারা অনলাইন বেটিংয়ে জড়িত, তাদের ফোন নম্বরের ইন্টারনেট গতি সীমিত করার বিষয়টি বিবেচনাধীন। এছাড়া সিম ও এমএফএসের ইকে-ওয়াইসি সমন্বয়ে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করা হবে।
সভায় অংশ নিয়ে বিকাশের একজন প্রতিনিধি জানান, জুয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত দুই সপ্তাহে ৩৯৭টি মোবাইল নম্বর বন্ধ করা হয়েছে এবং এখন ক্রলিং ইঞ্জিন ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইন ট্র্যাকিং প্রক্রিয়া উন্নয়ন করা হচ্ছে।
পেমেন্ট সিস্টেম এজেন্সির আরেক প্রতিনিধি জানান, সিম, মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সমন্বয় করা গেলে অনলাইন জুয়ার সমস্যা অনেকাংশে সমাধান সম্ভব।
এদিকে সভায় প্রস্তাব করা হয়, অনলাইন স্ক্যাম ও জুয়া প্রতিরোধে মাদক অধিদপ্তরের মতো একটি বিশেষ সংস্থা গঠন এবং ক্রস-ডোমেইন মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন।
অনলাইন জুয়া বন্ধে করণীয় ঠিক করতে মোবাইল অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে সার্ভিস, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের পর সিম সংখ্যা ১০টিতে সীমিত করলে জুয়া প্রতিরোধে এটি সহায়ক হবে। একই সঙ্গে যারা জুয়া খেলছেন, তাদের শনাক্ত করাও জরুরি।
