গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় হুমকি ভুল তথ্য: ড. ইউনূস

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০০ পিএম
গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় হুমকি ভুল তথ্য: ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আইআরআই-এর প্রতিনিধি দল/ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় হুমকি ভুল তথ্য । এটি পরিকল্পিত, অর্থায়িত এবং মুহূর্তেই উত্তেজনা সৃষ্টি করে। সত্য প্রকাশের আগেই মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ফেলে।’

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।

সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধি দলটি জানায়, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্তত ১০ জন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক পাঠাবে আইআরআই। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ সাক্ষাতের বিভিন্ন তথ্য জানান।

সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধি দলের প্রধান ও আইআরআই বোর্ড অব ডিরেক্টরসের সদস্য ক্রিস্টোফার জে ফাসনার বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে একটি শক্তিশালী পর্যবেক্ষক দল পাঠাবো। পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি ভোটের সময় সহিংসতার আশঙ্কা কমাতে সহায়তা করবে।

সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন—নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর নিউ আমেরিকান সোসাইটির (সিএনএএস) ইন্দো–প্যাসিফিক সিকিউরিটি প্রোগ্রামের পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ ফেলো লিসা কার্টিস, আইআরআই-এর কারিগরি বিশেষজ্ঞ জেসিকা কিগান, আবাসিক প্রোগ্রাম ডিরেক্টর স্টিভ সিমা, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেমি স্পাইকারম্যান। এসময় এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দলটি বর্তমানে বাংলাদেশের নির্বাচনের পূর্বাবস্থা মূল্যায়নের জন্য সফর করছে। বাংলাদেশের সব প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে প্রতিনিধি দলটির।

সাক্ষাৎকালে দলটি তাদের পূর্ববর্তী নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করে এবং নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময় করে। তারা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ক্রিস্টোফার ফাসনার বলেন, সব রাজনৈতিক দলই নির্বাচন চায়। আগের নির্বাচনের তুলনায় এবার আমরা এক ভিন্ন ও ইতিবাচক পরিবেশ দেখছি—এটি সত্যিই ভালো লাগছে।

প্রতিনিধি দলটি নাগরিক সমাজ ও ছাত্র সংগঠনগুলোর মতো স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির পরামর্শ দেয়, যাতে নির্বাচনের স্বচ্ছতা বাড়ে। তারা নির্বাচনের সময় ভুল তথ্য বা বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার (ডিজইনফর্মেশন) ঝুঁকি সম্পর্কেও আলোচনা করেন। ফাসনার আরও জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অপব্যবহার করে ছবি বিকৃতি বা জনমত প্রভাবিত করার আশঙ্কাও বাড়ছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পথে রয়েছে। এটি অনেক তরুণের জীবনের একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হবে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর বয়স ২৭ বছরের নিচে। তারা জীবনে প্রথমবার ভোট দেবে। আমরা চাই তারা সন্তুষ্ট থাকুক। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর ভোট চাই।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, জুলাই সনদ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। সব দলই সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটি আমাদের নির্বাচনের আরও এক ধাপ কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।

আইআরআই প্রতিনিধিরা গত ১৫ মাসে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্ব ও পরিবর্তনের ধারা প্রশংসা করেন। সাক্ষাৎকালে একজন প্রতিনিধি বলেন, ‘আপনি যে কাজগুলো করছেন, তা সত্যিই অসাধারণ। এই রূপান্তরের সময় আপনি দারুণভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’

এআর