চীনের সাংহাইয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ও চীনের পরিবহন মন্ত্রীর বৈঠক

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম
চীনের সাংহাইয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ও চীনের পরিবহন মন্ত্রীর বৈঠক
ছবি : সংগৃহীত

নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এর সাথে চীনের পরিবহন মন্ত্রী লিউ ওয়েই'র এক গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

চীনের সাংহাই নগরীতে গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে নৌপরিবহন খাতে চলমান সহযোগিতা, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া, চীন ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করার ওপর উভয়পক্ষ গুরুত্বারোপ করে।

বৈঠকে বিশেষভাবে চীনের সহযোগিতায়  মোংলা বন্দর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্পের অগ্রগতি, চীনের এক্সিম ব্যাংকের সাথে চলমান চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয় এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কারিগরি সহায়তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও  চীনের বিখ্যাত ইয়েনতাই বন্দর এর  সাথে মোংলা বন্দর  কতৃপক্ষের  যৌথ উদ্যোগ ও সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করলে পোর্ট ফ্যাসিলিটি বৃদ্ধি পাবে বলে বৈঠকে সহমত পোষণ করা হয়।

পোর্ট সেক্টরে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সহযোগিতার বিষয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন,  চীন বন্দর পরিচালনা ও ব্যবস্হাপনায় অত্যন্ত  দক্ষ। চীনের বিভিন্ন বন্দর ক্রমবর্ধমান কার্গো এবং কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির যে দক্ষতা অর্জন করেছে, সেই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের বন্দর গুলো কাজে লাগিয়ে অধিক লাভবান হতে পারবে।  উপদেষ্টা  মোংলা বন্দরে বাংলাদেশ-চীন জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়নাধীন "এক্সপানশন এন্ড মর্ডানাইজেশন অব মোংলা পোর্ট" প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য দ্রুত লোন এগ্রিমেন্টের বিষয়ে চায়না এক্সিম ব্যাংকের সাথে যোগাযোগের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় মোংলা বন্দরকে  রিজিওনাল হাব ও পোর্ট সেক্টরে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য চীন কতৃক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করা হয়।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, চায়নার মেরিটাইম সেক্টর অত্যন্ত উন্নত ও আধুনিক  এবং  এক্ষেত্রে গোয়াংজু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশী সী ফেয়ারদের ট্রেনিং ও নলেজ শেয়ারিং এর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।  এ সেক্টরে বিদ্যমান সহযোগিতা আরও বৃদ্ধির বিষয়ে একমত পোষন করা হয়। নৌপরিবহন উপদেষ্টা বাংলাদেশী সী ফেয়ারদের চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান সৃষ্টির আহবান জানান। 

আলোচনায় চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় একটি নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাবে বলে চীনের পরিবহন মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI) স্বাক্ষর করে যে আস্থা ও পারস্পরিক সহযোগিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তা ভবিষ্যতে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মোংলা, চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরসহ অন্যান্য সমুদ্র ও নদীবন্দর উন্নয়নে চীনের অব্যাহত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বন্দর খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চীনের সহযোগিতা দেশের বাণিজ্য ও সামুদ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল করে তুলছে। বিশেষত: মোংলা বন্দরের সাথে চীনের ইয়ানতাই বন্দরের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া, সমুদ্রগামী জাহাজে বাংলাদেশের প্রশিক্ষিত অফিসার ও নাবিক নিয়োগের বিষয়েও তিনি চীনের মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। 

বৈঠকটি দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় ও ফলপ্রসূ করে তুলবে বলে উভয়পক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করে। বৈঠকে উভয় দেশের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এআর