বিমানবন্দরে আগুন: স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে কোর কমিটি গঠন

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম
বিমানবন্দরে আগুন: স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে কোর কমিটি গঠন
ছবি : সংগৃহীত

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডসহ অন্যান্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে একটি কোর কমিটি গঠন করেছে সরকার।  ১২ সদস্যের এ কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির জরুরি সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক) সাংবাদিকদের এ কথা জানান। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সভায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনসহ কমিটির সদস্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। 

ফারুক ই আজম বলেন, 'আগুন লাগার পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে আমরা সভায় সেটা নিয়ে দীর্ঘ সময় কথা বলেছি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার স্থায়ী নির্দেশিকা অনুসারে আজকে এই সভাটি হয়েছে।'

তিনি বলেন, আজকে একটি কোর কমিটি গঠন করা হয়েছে।এটি ১২ সদস্য বিশিষ্ট। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিনিয়র সচিব এ কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন। এ কমিটির সভা আবার আগামী ৫ নভেম্বর হবে, তাই আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে এ কমিটি রিপোর্ট দাখিল করবে। এই কমিটির সুপারিশ অনুসারে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। 

কোর কমিটিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব, শিল্প সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সদস্য হিসেবে থাকবেন।

শুধু বিমানবন্দরের আগুন নয়, অন্যান্য আগুনের ক্ষেত্রে যাতে যথাযথ ব্যবস্থা করা যায় সেই বিষয়ে এ কমিটি সুপারিশ করবে। কমিটির সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবে বলেও জানানো উপদেষ্টা।

এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও সভায় পর্যালোচনা করা হয়েছে। সেখানে কিছু কিছু কাজ হয়েছে, কিছু কিছু কাজ হয়নি। কেন হয়নি- সেটা জবাব চাওয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে। 

কাদের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছিল- এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বেই তখন সেই কমিটিটিও হয়েছিল। তাই সচিবের কাছ থেকেই জানতে চাওয়া হয়েছে।'

সচিবালয়ের ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ ছিল কিনা- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা বলেন, 'সেটাও আমরা জানতে চেয়েছি। এটাও আমরা আগামী ৫ নভেম্বরের পর সুস্পষ্টভাবে জানাতে পারব।'

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা আরও বলেন, 'বিভিন্ন স্থাপনাগুলোতে আগুন নিভানোর ব্যবস্থা আছে, কিন্তু কার্যকর নয়। সেগুলো কেন কার্যকর নয়, এটাও সবার কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে।'

বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা দেখছেন কিনা- জানতে চাইলে ফারুক ই আজম বলেন, 'তদন্ত কমিটির রিপোর্ট না দেওয়া পর্যন্ত আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।'

সভায় সরকারের সক্ষমতা ও অক্ষমতা সবকিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'কিছু আছে এই ধরনের ঘটনাগুলো পরিপূর্ণ তদন্ত করার মত আমাদের কাছে যথাযথ প্রযুক্তি নেই। এ বিষয়ে আমাদের সীমাবদ্ধতাও আমরা পর্যালোচনা করেছি। আমরা আশা করছি আমরা একটা পরিচ্ছন্ন রিপোর্ট পাব এদের কাছ থেকে আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে। আগামী ৫ নভেম্বরের সভার পর আপনাদেরকে জানাতে পারব।'

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফারুক ই আজম বলেন, 'পরিপূর্ণ সবটা ছিল না তা নয়। ছিল, আবার কিছু কিছু ঘাটতিও ছিল। সিভিল এভিয়েশনের নিজস্ব ফায়ার সিস্টেম বা ইউনিট ছিল, পর্যাপ্ত ছিল না হয়তো। সে কারণে হয়তো নেভানো সম্ভব হয়নি। আমরা সবকিছু তদন্ত করে জানতে চাচ্ছি- কিভাবে আরও দ্রুত আগুনকে নিয়ন্ত্রণ করা যেত, সেটা নিয়েও আমরা ভাবছি। রিপোর্টটা পেলে আমরা বুঝতে পারবো।'

অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে বিদেশ থেকে প্রযুক্তি আনার চিন্তাভাবনা আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সেই চিন্তা ভাবনা আছে, এই কমিটি সেই বিষয়ে সুপারিশ দিবে।'

এআর