জুলাই সনদ নিয়ে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সরকারকে চূড়ান্ত সুপারিশ: আলী রীয়াজ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩২ এএম
জুলাই সনদ নিয়ে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সরকারকে চূড়ান্ত সুপারিশ: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পাঁচ দফা পরামর্শ পেয়েছে কমিশন। এসব পরামর্শের ভিত্তিতে কমিশন ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সরকারকে চূড়ান্ত সুপারিশ দেবে।’

রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বুধবার রাতে জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের শেষ দিনের আলোচনা শেষে এসব কথা বলেন আলী রীয়াজ। শেষ দিনের আলোচনা বেলা ৩টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা আজ সারা দিনের আলোচনার সারাংশ নিয়েছি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের আলোকে সরকারকে দ্রুত পরামর্শ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি জানান, বিশেষজ্ঞরা সর্বসম্মতভাবে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছেন। তার মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য একটি বিশেষ আদেশ জারি করা, ওই আদেশের মাধ্যমে গণভোট আয়োজন করা, গণভোটে দুটি আলাদা প্রশ্ন রাখা, নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও ১৩তম জাতীয় সংসদ গঠন করা এবং গণভোটে সনদ  অনুমোদনের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বর্ণিত সংস্কার সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা রয়েছে।

কমিশনের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দুটি প্রস্তাব উঠে এসেছে। বিএনপিসহ একাধিক দল জাতীয় নির্বাচনের দিনই পৃথক ব্যালটে গণভোট নেওয়ার পক্ষে। আর জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে কমিশন বলছে, সবাই একমত হয়েছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সংসদকে সংবিধানের কাঠামোগত পরিবর্তনের ক্ষমতা দেওয়া উচিত।

আলী রীয়াজ জানান, কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে ১৫ অক্টোবর। এর মধ্যে তাঁরা জুলাই সনদের ওপর একটি স্বাক্ষরদান অনুষ্ঠান আয়োজন করতে চান। তিন-চতুর্থাংশের বেশি দল ইতিমধ্যে নাম পাঠিয়েছে। বাকিরা কয়েক দিনের মধ্যে পাঠাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঐকমত্য কমিশন ১৮–১৯ অক্টোবরের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া ও প্রাপ্ত দলিলের ওপর একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। এতে থাকবে গত এক বছরের আলোচনার সারসংক্ষেপ এবং জুলাই সনদ প্রণয়ন থেকে গণভোট প্রস্তাব পর্যন্ত পুরো যাত্রার বিবরণ, জানান আলী রীয়াজ।

এ বিষয়ে রীয়াজ বলেন, ‘আমরা চাই এই ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারীদের সহযোগিতায় আগামী সাত দিনেই সব কাজ শেষ করতে। সবাই সহযোগিতা করলে আমরা ১৫ তারিখের মধ্যেই স্বাক্ষর অনুষ্ঠান করতে পারব।’

শেষ দিনের আলোচনায় অংশ নেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ (সিপিবি) ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুব মিয়া। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দার সঞ্চালনা করেন।