শাহ আমানতে কার্গো ফ্লাইট চালু ফেব্রুয়ারিতে

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত:১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩২ এএম
শাহ আমানতে কার্গো ফ্লাইট চালু ফেব্রুয়ারিতে

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালুর যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তাতে ভাটা পড়েছে। জুলাইয়ে কার্গো ফ্লাইট চালুর লক্ষ্য নিয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শুরু হলেও আশানুরূপ অগ্ৰগতি নেই।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশা, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি নাগাদ এই কার্যক্রম শুরু হতে পারে।

গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। এর ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে পণ্য পাঠানো নিয়ে রপ্তানিকারকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দেয়।

বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর হয়ে ভারতের কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনের ওই রুটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চাপমুক্ত বিকল্প হিসেবে দ্রুততর সেবা ও কম খরচে সুবিধা দিচ্ছিল। শিল্পখাতের হিসাব অনুযায়ী, অফ-সিজনে বাংলাদেশের পোশাক চালানের প্রায় ১৮ শতাংশই এই রুটে সম্পন্ন হতো।

রপ্তানিকারকদের আশ্বস্তের পাশাপাশি রপ্তানির গতি ধরে রাখতে সরকার সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নেয়।

কার্গো ফ্লাইট ব্যবহারকারী বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা জানান, চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু করতে হলে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে একাধিক অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। এরমধ্যে এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস) স্ক্যানার স্থাপন সবচেয়ে জরুরি। যা এখনো ব্যবস্থা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। হিমাগার ও কার্গো শেড নির্মাণের কাজও শুরু হয়নি।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব কাজ শেষ করতে কমপক্ষে কয়েক মাস সময় লাগবে। এ লক্ষ্যে প্রায় ৭০ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা শিগগির টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু করতে দুটি ইডিএস স্ক্যানার, আধুনিক কার্গো শেড এবং অন্যান্য অবকাঠামো তৈরি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানের কার্গো অপারেশনের উপযোগী হয়ে উঠবে। ফেব্রুয়ারি নাগাদ এসব কাজ শেষ হওয়ার আশা করছি।

জানা গেছে, এরই মধ্যে কোরিয়ান কোম্পানি ইয়াং ওয়াং গ্রুপ চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালুর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা উন্নয়নের জন্য একটি ইডিএস স্ক্যানার দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক)। এছাড়া চীনের একটি এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানও ফ্লাইট চালুর আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে সপ্তাহে দুটি কার্গো ফ্লাইট চালুর প্রস্তাব এসেছে, যা উজবেকিস্তান ও চীনের রুট হয়ে ইউরোপে পৌঁছাবে।

তবে সরাসরি ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পাঠাতে এখনই সক্ষম নয় শাহ আমানত বিমানবন্দর। বর্তমানে ইডিএস স্ক্যানার না থাকায় রপ্তানি পণ্য মধ্যপ্রাচ্যের কোনো বিমানবন্দরে স্ক্যানিং শেষে গন্তব্যে পাঠানো হয়। এতে রপ্তানিকারকদের খরচ ও সময়- দুই-ই বাড়ছে।

বাংলাদেশ ফ্রেইড ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, সরকার চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালুর যে উদ্যোগ নিচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে একটি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে। তবে এই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের অবকাঠামো ও কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে উল্লেখ করে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ২৭০ টন ধারণ ক্ষমতার নতুন কার্গো শেড নির্মাণ এবং স্ক্যানার মেশিন ক্রয়ের জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ সংক্রান্ত ৭০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্ৰহণ করা হয়েছে।

কর্মকর্তারা আরও জানান, সরকারি ক্রয় নীতিমালা অনুযায়ী টেন্ডার প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক। তাই নীতিমালা অনুসারে সময় লাগছে।