‘দুর্যোগ মোকাবিলায় পূর্বাভাসমূলক কার্যক্রমে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি’


ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ দুর্যোগ ঝুঁকির কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। এজন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুর্যোগ সহিষ্ণুতার পরিবেশ গড়ে তোলার বিকল্প নেই, এমনটাই বলেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম (বীর প্রতীক)।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘অ্যান্টিসিপারেটরি অ্যাকশন বা পূর্বাভাসভিত্তিক আগাম সাড়াদান কার্যক্রমের তৃতীয় ন্যাশনাল ডায়ালগ প্ল্যাটফর্ম’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ জান মাল ও জীবিকার ব্যাপক ক্ষতি করছে। এগুলো উন্নয়ন মন্থর করছে এবং দারিদ্র্য বিমোচনকে আরও কঠিন করে তুলছে।
ফারুক-ই-আজম বলেন, দুর্যোগ ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। আকস্মিক বন্যা, বজ্রপাত, তাপপ্রবাহ, শৈতপ্রবাহ ও খরা মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে হুমকির মুখে ফেলছে। তবে উন্নত প্রস্তুতির কারণে জীবনহানি আগের তুলনায় কমলেও অর্থনৈতিক ক্ষতি ও জীবিকার ধ্বংস এখনো ব্যাপক। এজন্য ২০১৫ সাল থেকে দুর্যোগ মোকাবিলার পাশাপাশি দুর্যোগ প্রশমনে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অ্যান্টিসিপারেটরি অ্যাকশন কেবল পূর্বাভাস নয় বরং পূর্বাভাসের ভিত্তিতে আগাম পদক্ষেপ নেওয়া। তরুণদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে সাইক্লোন প্রিপেয়ার্ডনেস প্রোগ্রামের স্বেচ্ছাসেবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। এই মডেল সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধ স্বেচ্ছাসেবী শক্তি গড়ে তোলা দরকার।
অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রেজওয়ানুর রহমান বলেন, একসময় পূর্বাভাস দেওয়ার সুযোগ ছিল না। এখন আমরা বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিতে পারছি। আকস্মিক বন্যা, তাপ ও শৈত্যপ্রবাহের মতো দুর্যোগেরও পূর্বাভাসের প্রটোকল তৈরির চেষ্টা চলছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে যত দ্রুত পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে, তত ক্ষয়ক্ষতি কমবে।
দুই দিনব্যাপী এ সংলাপে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থা, এনজিও, শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।
বহুমুখী দুর্যোগ প্রেক্ষাপট অন্তর্ভুক্তিমুখী অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বিত এবং স্থায়ীভাবে পরিচালিত আগাম সাড়াদান কার্যক্রম প্রতিপাদ্যে এবারের ডায়ালগটি হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পূর্বাভাসভিত্তিক সাড়াদান কার্যক্রম টাস্কফোর্স নেতৃত্বে এবং অ্যান্টিসিপারেটরি অ্যাকশন টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপের সহযোগিতায় দুই দিন ব্যাপী এই আয়োজনে করা হয়েছে। পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে পূর্বাভাসভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়নের সক্ষমতা বাড়ানো এই সংলাপের মূল লক্ষ্য।