মিয়ানমারে বাংলাদেশি নৌযানের ‘রহস্যজনক’ যাতায়াত

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩০ এএম
মিয়ানমারে বাংলাদেশি নৌযানের ‘রহস্যজনক’ যাতায়াত

বাংলাদেশের অসংখ্য নৌযান জলসীমা অতিক্রম করে রহস্যজনকভাবে মিয়ানমারে অভ্যন্তরে যাতায়াত করছে। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির রামু সেক্টর কমান্ডার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, সীমান্ত নিরাপত্তায় বিজিবি নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। যে পদক্ষেপে রাডার থেকে তথ্য সংগ্রহ, ড্রোন, নাইট ভিশন ডিভাইস এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারিতেই ধরা পড়ছে বাংলাদেশের নৌযানের জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমারে যাতায়াতের দৃশ্য। 

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন বিজিবির ঊর্মি রেস্ট হাউসের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। গত কয়েকদিনের পর্যবেক্ষণের তথ্য দিয়ে বিজিবি জানায়, নাফ নদ ও সাগর উপকূলীয় মহেশখালী, কুতুবদিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা ও কুয়াকাটা এলাকা দিয়ে মাদক চোরাচালানের দুটি অন্যতম প্রধান পথ তৈরি হয়েছে। এই দুই পথে অধিকাংশ চোরাচালান হচ্ছে। ৮০ শতাংশ মাদকই সাগর উপকূলীয় এলাকা দিয়ে চোরাচালানের ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বিজিবির কাছে রয়েছে। এই রুটগুলো ব্যবহার করে মিয়ানমার থেকে আসা মাদক শুধু বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করছে না, বরং অন্যান্য দেশেও পাচার হচ্ছে। 
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার বলেন, বাংলাদেশি নৌযানগুলো কেন রহস্যজনকভাবে মিয়ানমারে যাতায়াত করছে সে রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছি আমরা। তবে জেলেরা যেন সীমান্ত অতিক্রম না করেন সে ব্যাপারে তাদের সতর্ক করা হচ্ছে। 

সংবাদ সম্মেলনে সীমান্ত নিরাপত্তা, অনুপ্রবেশ, মাদক ও চোরাচালান রোধে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে জানিয়ে গত ১৫ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাদকদ্রব্য উদ্ধারের তথ্য জানানো হয়। বিজিবি জানায়, উল্লিখিত দুই মাসে ২৮ লাখের বেশি ইয়াবা, প্রায় এক কেজি ক্রিস্টাল মেথ বা আইসসহ ৮৮ কোটি টাকার বেশি মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এই সময়ে সীমান্ত দিয়ে আসা ২২টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। 

সেক্টর কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, উদ্ধার করা অস্ত্রগুলো মিয়ানমার থেকে আসা। দেশটির রাখাইন রাজ্য আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানে জড়িয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। তিনি আরও জানান, গত ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত সমুদ্র থেকে আরাকান আর্মি ২২৮ জন জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে বিজিবির প্রচেষ্টায় ১২৪ জনকে ফেরত আনা গেছে। এখনও ১২টি ট্রলারসহ ১০৪ জন জেলে আরাকান আর্মির হাতে আটক রয়েছে; যার মধ্যে ৯৫ জন বাংলাদেশি এবং ১৩৩ জন রোহিঙ্গা।

আটক জেলেদের ফেরত আনতে বিজিবি নিজস্ব কৌশলে চেষ্টা চালাচ্ছে জানিয়ে সেক্টর কমান্ডার বলেন, আরাকান আর্মির সঙ্গে আমাদের অফিশিয়াল যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না। নানা মাধ্যমে কৌশলে যোগাযোগ করতে গিয়ে বিলম্ব হচ্ছে। তবে দ্রুত তাদের ফেরত আনা সম্ভব হতে পারে।