যমুনা অভিমুখে বেসরকারি শিক্ষকরা, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ


জাতীয়করণবঞ্চিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকদের যমুনা অভিমুখে যাত্রায় বাধা দিয়েছে পুলিশ। এ সময় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করা হয়।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে আন্দোলনকারীরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। তারা হাইকোর্ট সংলগ্ন কদম ফোয়ারার সামনে পৌঁছালে পুলিশ আটকে দেয়। এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও এক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। পরে আন্দোলনকারীরা পিছিয়ে আবার প্রেস ক্লাবের দিকে চলে যান।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কনসালটেশন কমিটির সুপারিশে অনধিক ৫ হাজার বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের দাবিতে সোমবার সকাল ১০টা থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন শুরু হয়। বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় হাজারখানেক শিক্ষক এখানে জমায়েত হন।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি তৎকালীন সরকার সারাদেশের সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়। তখন দেশে ৩০ হাজারের অধিক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও সে সময় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কিছুসংখ্যক বিদ্যালয় বাদ রেখে ২৬ হাজার ১৯৩টি জাতীয়করণ করা হয়।
শিক্ষকরা বলেন, বঞ্চিত বিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে ২০২৫ সালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কয়েক দফা আন্দোলন হয়। পরে গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ের কনসাল্টেশন কমিটি বঞ্চিত বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের জন্যেসুপারিশ করলেও এখনো কোনো অগ্রগতি নেই।
সাধারণ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. নওশাদ আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। শত প্রতিকূলতার মাঝেও বিশ্ব দরবারে আজ বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের চিঠি ও কনসালটেশন কমিটির সুপারিশ করা অনধিক ৫ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জোর দাবি জানাই।’
পরিষদের সমন্বয়ক মাহবুবা মালা বলেন, ‘জাতীয়করণ না হওয়ায় শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমরা অন্যের শিশুকে পাঠদান দিলেও আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। এমতাবস্থায় শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
আরেক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম (বগুড়া) বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমরা শুধু আশ্বাস পেয়েছি, বাস্তবতার কিছুই পাইনি। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’