এ বছর জলাবদ্ধতা কমেছে: ডিএনসিসি প্রশাসক

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৭ পিএম
এ বছর জলাবদ্ধতা কমেছে: ডিএনসিসি প্রশাসক

রাজধানী ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেছেন, ‘এ বছর রেকর্ড বৃষ্টিপাতের পরও জলাবদ্ধতার স্থান ও কারণ যথাযথভাবে চিহ্নিত করে কাজ করা এবং গত ছয় মাসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৯৬ কিলোমিটার খাল খনন ও ২২০ কিলোমিটার নালা পরিষ্কারের ফলে নগরের জলাবদ্ধতা কমেছে।’

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটির নগরভবনে ‘ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসির উদ্যোগ ও কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘বিমানবন্দর এলাকায় কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান থাকায় জলাধার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সে এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন কঠিন হয়ে পড়েছে। এসব প্রকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত, বিশেষ করে জলাধার পুনরুদ্ধার না হলে, স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। আপাতত ওই এলাকায় জলাবদ্ধতার অস্থায়ী সমাধান করা হয়েছে।’

ডিএনসিসি প্রশাসক জানান, ভবিষ্যতে স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রকৌশল বিভাগ, ড্রেনেজ সার্কেল ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগকে সমন্বিত করে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ধানমন্ডি, নাখালপাড়া, কাজীপাড়া-শেওরাপাড়া, মিরপুর, কালশী ও বিমানবন্দর এলাকাসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে খাল খনন, নালা নির্মাণ ও পানি নিষ্কাশনের নতুন পথ তৈরির কাজ চলছে। বিশেষ করে কল্যাণপুর, বগার মা, প্যারিস ও কসাইবাড়ি খাল পুনঃখননের কাজ অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘গত ২০ বছরে অবহেলিত বগার মা খালের খোঁজ কেউ নেয়নি। বর্তমানে খালটির খননকাজ প্রায় শেষের দিকে, ফলে মিরপুরের ৬০ ফিট এলাকার জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমে গেছে।’

মোহাম্মদপুরে রামচন্দ্রপুর খালের জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর সেখানে একটি ভবন নির্মাণ হয়েছে। বিষয়টি ডিএনসিসির নজরে এসেছে। জেলা প্রশাসন, রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) ও সিটি করপোরেশন মিলে একটি যৌথ জরিপ দল গঠন করা হয়েছে। জরিপ শেষে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।’

ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন বলেন, ‘জলাবদ্ধতার মূল কারণ হলো নালায় পলিথিন, প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন আবর্জনা ফেলা। ফলে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যায় এবং পানি খাল বা জলাশয়ে নামতে পারে না। তাই নালায় যেকোনো কিছু ফেলা বন্ধ করতে হবে। না হলে নালা পরিষ্কার করার কয়েক মাসের মধ্যেই আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।’

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এ বি এম সামসুল আলম বলেন, ‘আমাদের প্রবণতা হচ্ছে খালে যেকোনো কিছু ফেলে দেওয়া। এই প্রবণতা থেকে সরে আসতে হবে। খাল রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। খালে বর্জ্য ফেলা অব্যাহত থাকলে খাল আবারও ময়লা-আবর্জনায় ভরে যাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটির সচিবের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা প্রধান সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন-উল-হাসান, বিভিন্ন অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তারা।