সাদিক কায়েম ভোটকেন্দ্রের ভেতর মেকানিজম করছে, আর ছাত্রদল বাইরে: ভিপি প্রার্থী আবদুল কাদের


ডাকসু নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবদুল কাদের। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতার হিস্যার ভাগাভাগি করছে।
ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম ভোটকেন্দ্রের ভেতরে গিয়ে ‘মেকানিজম’ (কারসাজি) করেছে আর ছাত্রদল বাইরে থেকে ‘মেকানিজম’ করেছে বলেও অভিযোগ তাঁর।
আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে টিএসসিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
আবদুল কাদের বলেন, ‘একটা অথর্ব, আনাড়ি নির্বাচন কমিশন। সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। আমরা দেখেছি, একটা গোষ্ঠী, একটা ছাত্র সংগঠন, একটা রাজনৈতিক দল বাহির থেকে মেকানিজম করেছে। একটা ছাত্র সংগঠন, একটা রাজনৈতিক দল ভেতর থেকে মেকানিজম করেছে। আমরা দেখেছি, সাদিক কাইয়ুম ভেতরে গিয়ে মেকানিজম করতেছে। আমরা দেখেছি, বাহির থেকে ছাত্রদল মেকানিজম করেছে। কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা কেউ মান্য করেন নাই।’
তিনি বলেন, ‘আমি বারবার করে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অন্যান্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দ্বারস্থ হওয়ার চেষ্টা করেছি। তাদেরকে কন্টাক্ট করার চেষ্টা করেছি। তারা আমাদের বিন্দুমাত্র রেসপন্স করেন নাই। ক্ষেত্রবিশেষে রেসপন্স করেছেন।’
আবদুল কাদের আরও বলেন, ‘এই টিএসসির মতো জায়গায় ব্যালট পেপারে সাদিক কায়েম, ফরহাদের যে নামটা সেটা আগে থেকে ফিল আপ করা। এ বিষয়ে আমি গোলাম রব্বানীকে যখন ফোন দিই, তখন তিনি অন্যতম একজন রিটার্নিং অফিসার আমাকে বলেন, ‘‘আমি সমস্যার সমাধান করে দিয়েছি।’ ’ আমি জানতে চেয়েছি, কী সমাধান করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ব্যালট পেপারটা বদলে দিয়েছি।’ ’ এটা হচ্ছে তাদের সমাধান।’
নির্বাচন কমিশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতার হিস্যার ভাগাভাগি করতেছেন। তারা প্রত্যেকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত, তারা তাঁবেদারি করতেছেন।’
আবদুল কাদের বলেন, ‘আজ স্পষ্ট হয়ে গেছে, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন ক্ষমতার ভাগাভাগির রাজনীতিতে নিমজ্জিত। আমরা দেখেছি, ভিসি, প্রক্টর, সহকারী প্রক্টররা সবাই ভাগাভাগির মাধ্যমে পদ বণ্টন করেছেন। অনেকে জামায়াতপন্থী, অনেকে বিএনপিপন্থী। শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত হয়েছে।’
বিশেষ করে ভিসি (উপাচার্য) একটি সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম (এসএমটি) গঠন করে প্রক্টরকে ক্ষমতাশালী করেছেন উল্লেখ করে আবদুল কাদের বলেন, ‘অথচ প্রক্টর শিক্ষকের মর্যাদায় ভিসির অনেক নিচে। এভাবে তাঁকে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দুতে বসানো হয়েছে জামায়াত-শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য। প্রক্টর হলগুলোতে শৃঙ্খলা কমিটির নামে ছায়া সরকার চালাচ্ছেন, সব জায়গায় মেকানিজম করছেন। ১৭০ জন পোলিং অফিসার নিয়োগের বিষয়েও কেবল প্রক্টরই জানতেন, কারা দায়িত্বে থাকবে।’
সব মিলিয়ে আজকের নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা আন্তরিকভাবে অংশ নিলেও প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা ও দলীয় প্রভাবের কারণে এটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা দাবি করছি এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’