সিলেটে সাদাপাথর পরিদর্শনে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের তদন্ত কমিটি


সিলেটের সাদাপাথর পর্যটন স্পট পরিদর্শন করেছে পাথর লুটের ঘটনায় মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব জাহেদা পারভীনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যদের দলটি সাদাপাথর এলাকায় যান।
এসময় তারা সাদাপপাথর এলাকা ঘুরে দেখেন। কথা বলেন স্থানীয় লোকজন, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গ। তদন্ত কমিটির সদস্যরা লুট হওয়া সাদাপাথরের বেশ কয়েকটি স্থান সরেজমিনে ঘুরে দেখেন।
এর আগে প্রথমে রেলওয়ে বাঙ্কার এলাকা পরিদর্শন করেন তারা। এসময় সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
তবে পরিদর্শনকালে গণমাধ্যমের কাছে কোনো বক্তব্য দেননি তদন্ত কমিটির সদস্যরা। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিটির প্রধান জাহেদা পারভীন জানান, আমরা আরও একদিন সিলেটে থাকব। আজ সারাদিন আমরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলব, আগামীকাল (বুধবার) আমরা পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলব।
গত ২০ আগস্ট মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
কমিটিতে সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব জাহেদা পারভীনের নেতৃত্বে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তদন্ত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত আছেন। কমিটি ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করবে।
এদিকে, পাথর ফেরত দিতে জেলা প্রশাসনের ৩ দিনের আল্টিমেটাম শেষ হয়েছে সোমবার।
প্রশাসনের বিভিন্ন সূত্র বলছে, এ পর্যন্ত লুট হওয়া ২৫ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা গেছে। এর মধ্যে ৬ লাখ ঘনফুট পাথর প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। প্রতিস্থাপনের জন্য ভোলাগঞ্জের ১০ নম্বর ঘাট এলাকায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে আরও ৭ লাখ ঘনফুট পাথর।
পর্যায়ক্রমে উদ্ধারকৃত পাথরগুলো সাদাপাথর পর্যটন স্পটে প্রতিস্থাপন করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম।
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে সাদা পাথরে ব্যাপক লুটপাট শুরু হয়। চলতি আগস্টে পাথরহীন সাদাপাথরের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
গত ১৩ আগস্ট দুদকের সিলেট কার্যালয়ের উপ পরিচালক রাফি মো. নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে একটি টিম সাদাপাথর পরিদর্শন করে। এরপর তারা ১৬ আগস্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
প্রতিবেদনে সাদাপাথর লুটে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা মিলিয়ে ৫৩ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাথর আত্মসাতের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা ও যোগসাজশ ছিল।
সাদাপাথর লুটের ঘটনায় ইতোমধ্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদকে ওএসডি ও কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহারকে বদলি করা হয়েছে।
সাদাপাথর লুট নিয়ে গত ১৭ আগস্ট পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এখানে যে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে উঠেছে, এর বিপরীতে প্রশাসনের হয় যোগসাজশ করেছে, নতুবা নীরব থেকেছে অথবা দুটোই ঘটেছে। এজন্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব এবং দ্রুতই নেব।’