মনে হয় না আলাদা পিতৃত্বকালীন ছুটি দরকার আছে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা


স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, “আমার মনে হয় না আলাদা পিতৃত্বকালীন ছুটি দরকার আছে। ছুটি যদি দিতে হয়, তাহলে বাবারও শিশুকে সময় দিতে হবে।”
সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
নূরজাহান বেগম বলেন, “আমি নিজেও মা। আমার মনে হয় না আলাদা পিতৃত্বকালীন ছুটি দরকার আছে। তবে যদি দেওয়া হয়, শর্ত থাকতে হবে- পিতা কতক্ষণ শিশুকে দেখেছেন, তার যত্ন নিয়েছেন, মাকে সাহায্য করেছেন- এসব লিখিতভাবে জানাতে হবে।”
উপদেষ্টা মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানো প্রসঙ্গে বলেন, “মাতৃদুগ্ধ নিয়ে কাজ এককভাবে সরকার বা স্বাস্থ্য সেক্টরের নয় বরং এনজিও কর্মী থেকে শুরু করে মসজিদের ইমামেরও। খুতবায় এ বিষয়ে কথা বলা যেতে পারে। এমনকি মন্দির ও গির্জায় সচেতনতামূলক আলোচনা হতে পারে। এখানে মিডিয়ারও দায়িত্ব আছে। মিডিয়া আমাদের কাজগুলো, সচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো উপস্থাপন করে জাতিকে সঠিক পথ দেখাতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “শিশুদের গুঁড়া দুধ খাওয়াতে উদ্বুদ্ধ না করে সমন্বিতভাবে মাতৃদুগ্ধের ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। এজন্য সচেতনতা তৈরি করতে হবে।”
নূরজাহান বেগম বলেন, “সব ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের দোষারোপ করে লাভ নেই। যেখানে ধারণ ক্ষমতা ২,৬০০ সেখানে রোগী আসে ৫ হাজার। এক হিসাব অনুযায়ী ৬৫% ডেলিভারি হয় হাসপাতাল বা ক্লিনিকে এবং ৩৫% গৃহে। কাজেই ধাত্রীদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে।”
কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস কে রায়। তিনি জানান, দেশে মাতৃদুগ্ধপানের হার কমছে। ২০১৭-১৮ সালে প্রথম ছয় মাসে একচেটিয়াভাবে মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার ছিল ৬৫%, যা ২০২২ সালের জরিপে কমে দাঁড়িয়েছে ৫৮%।
তার মতে, এর কারণ হলো সচেতনতামূলক কার্যক্রমের ঘাটতি, ব্রেস্ট-মিল্ক সাবস্টিটিউট (বিএমএস) আইন প্রয়োগ না হওয়া ও কর্মজীবী মায়েদের পর্যাপ্ত ছুটি না পাওয়া।
সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সরোয়ার বারী বলেন, “মেধাসম্পন্ন জাতি গড়তে চাইলে শিশুকে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানো নিশ্চিত করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আশরাফী আহমদ, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন, বিবিএফের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সারিয়া তাসনিম প্রমুখ।