২৪ আগস্ট থেকে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের শুনানি শুরু


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনি এলাকাগুলোর পুনর্নির্ধারিত সীমানা সম্পর্কে আপত্তি বা পরামর্শ দাখিল করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই আগামী ২৪ আগস্ট থেকে সংসদীয় আসনের খসড়া সীমানা নিয়ে আপত্তি শুনানি শুরু করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি); যা চলবে আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত থাকবেন শুনানিতে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) ইসির উপ-সচিব মাহবুব আলম শাহ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ২৪ আগস্ট কুমিল্লা অঞ্চলের দাবি-আপত্তির শুনানি করা হবে। এদিন দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ৩ ও ৫; আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কুমিল্লা-৬, ৯, ১০ ও ১১; সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত নোয়াখালী-১, ২, ৪ ও ৫, চাঁদপুর-২ ও ৩, ফেনী-৩, লক্ষ্মীপুর-২ ও ৩ আসনের শুনানি হবে।
২৫ আগস্ট খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের দাবি-আপত্তির শুনানি হবে। এ দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সাতক্ষীরা-৩, ৪, যশোর-৩, ৬, বাগেরহাট- ১, ২ ও ৩; আড়াইটা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঝালকাঠি-১, বরগুনা-১, ২, পিরোজপুর-১, ২, ৩, চট্টগ্রাম-৩, ৫, ৮, ১৯, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান আসনের শুনানি হবে।
২৬ আগস্ট ঢাকা অঞ্চলের দাবি-আপত্তির শুনানি হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ-১, ২, ৩, নরসিংদী-৪, ৫, নারায়ণগঞ্জ-৩,৪,৫; আড়াইটা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঢাকা-১,২,৩,৪,৫,৬,৭,১০,১৪,১৫,১৬,১৮ ও ১৯ আসনের শুনানি হবে।
২৭ আগস্ট রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও সিলেট অঞ্চলের দাবি-আপত্তির শুনানি হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পঞ্চগড়-১, ২, রংপুর-১, কুড়িগ্রাম-৪, সিরাজগঞ্জ-২, ৫, ৬, পাবনা-১; আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল-৬, জামালপুর-২, কিশোরগঞ্জ- ১, সিলেট-১, ফরিদপুর-১, ৪, মাদারীপুর-২, ৩, শরীয়তপুর- ২ ও ৩ আসনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও জানানো হয়, শুনানি শেষে রায় সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেবে ইসির আইন শাখা।
উল্লেখ্য, গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৮৩টি আসনের সীমানা নিয়ে ১ হাজার ৭৬০টি দাবি-আপত্তি জমা পড়ে ইসিতে। এগুলোই নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ করবে ইসি।
৩০ জুলাই ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোটার সংখ্যার সমতা আনতে গিয়ে গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়। বাগেরহাটের আসন চারটি থেকে কমিয়ে তিনটির প্রস্তাব করা হয়।
এদিকে গতকাল সীমানা পুনর্নির্ধারণ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ৬৪ জেলার গড় ভোটার নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০। এটা ধরে জেলায় একটি আসন বাড়ালে তা গাজীপুরে হবে। এ গড়ের কম বাগেরহাটে একটি কমালে সমতা চলে আসে। দুই জেলার আসনই এফেক্টেড হয়েছে। আর কোথাও ঝামেলা নেই। ৩৯টি আসনে অ্যাডজাস্টমেন্ট রয়েছে।
সর্বশেষ কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে, ইসি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ১০টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছিল।
এর আগে, ২০১৮ সালে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২৫টি আসনের সীমানা পরিবর্তন করে। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৩ সালে দশম জাতীয় নির্বাচনের আগে ৮৭টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছিল। অন্যদিকে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালে ১৩৩টি আসনের সীমানায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনে।