জেনেভা ক্যাম্পে তরুণকে গলা কেটে হত্যার পর যৌথ বাহিনীর অভিযান, গ্রেপ্তার ৫


রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের সংঘর্ষে শাহ আলম (২০) এক তরুণ নিহত হওয়ার পর পুরো এলাকা ঘিরে অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। এতে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে দুপুরে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মোহাম্মদপুর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
আজ সোমবার রাত ৮ টার দিকে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী।
এর আগে সোমবার দুপুর থেকে ক্যাম্পে দুই গ্রুপ মাদক কারবারি দের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয় শাহনেওয়াজ সান্নু এবং পিচ্চি রাজা গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে রাজা নিজেই। তবে ক্যাম্পে এই দুজনের কেউ দৃশ্যমান না। তাদের অনুসারীরা এই সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে। সংঘর্ষে শাহ আলম নামে এক তরুণকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এরপর সন্ধ্যায় যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যৌথবাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্পের প্রতিটি গলির মুখে অবস্থান নিয়ে তল্লাশি চালায়। এ সময় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তাদের নাম পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এর আগে সোমবার দুপুরে দেখা গেছে, ক্যাম্পের পশ্চিম পাশের সরু অলিতে অবস্থান নেয় শান্তি বাহিনীর গ্রুপ এবং দক্ষিণ পাশে অবস্থান নেয় পিচ্চি রাজার অনুসারিরা। তারা দুপুরে দফায় দফায় ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়। এতে ক্যাম্পে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর পর সরু গলি থেকে বের হয়ে ইট-পাটকেল ছুড়ে আবার হারিয়ে যায়। বেলা ২টার পর পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয় ক্যাম্পে। পুলিশের অভিযান শুরু করলে টের পেয়ে চলে যায় দুই গ্রুপের সদস্যরা। এ সময় শাহ আলম নামে এক তরুণকে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে যায়। তবে সে কোন গ্রুপের হয়ে কাজ করত, তা জানা যায়নি। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে কর্মব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের অভিযোগ, নতুন করে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। মাদক কারবারি বুনিয়া সোহেল ও বেজি নাদিম শান্তি বাহিনী নামে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের হয়ে কাজ করে। তারা পিচ্চি রাজার নিয়ন্ত্রণাধীন মাদকের স্পট দখলের চেষ্টা করছে। এই নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছেন বাবুর্চি বশির (৪০), মদিনা (২০) ও ফায়জান (২৫)। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাম্পের পাকা এলাকায় বিয়ের অনুষ্ঠানে ককটেল বিস্ফোরণে বাবুচি নাসির নামে আরেক ব্যক্তি আহত হন।
গত বৃহস্পতিবার থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে একটি বিয়েতে ককটেল হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা এতে এক নারী আহত হন। এছাড়াও রোববার তিন দফা ককটেল বিস্ফোরণে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে।
জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা বলছে, শাহ নেওয়াজ, বুনিয়া সোহেল, পোপলা মুন্না, বেজি নাদিম, চুয়া সেলিম, খুল্লা সাহিদ ও দোগলা আজমসহ বেশ কয়েকজনের নামে মাদক ও হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তারা ক্যাম্পে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার জুয়েল রানা বলেন, মাদক কারবারি রা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। তবে তারা জামিনে এসে আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আজ দুপুরে অভিযান চালিয়ে ফয়সাল ও সেলিম নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।