গাড়ির ভেতর দুই লাশ, হাসপাতাল থেকে রোগী নিতে এসেছিলেন তারা

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১১ আগস্ট ২০২৫, ০৮:২৭ পিএম
গাড়ির ভেতর দুই লাশ, হাসপাতাল থেকে রোগী নিতে এসেছিলেন তারা

রাজধানীর মৌচাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পার্কিংয়ের একটি প্রাইভেট কার থেকে যে দুইজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ, তাদের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- গাড়িচালক জাকির (৪৫) ও তার সহকারী মিজান (৪০)। তাদের দুজনেরই বয়স ৪০–এর কাছাকাছি।

রবিবার (১০ আগস্ট) ভোরে তারা নোয়াখালীর চাটখিল থেকে রোগী নিতে এই হাসপাতালে আসেন। এরপর থেকে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার দুপুরে গাড়ির ভেতর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

দুইজনেরই শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে গেছে। তাদের হত্যা করা হয়েছে, নাকি অন্য কোনো কারণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে, এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলছে না পুলিশ।

হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালের রেকর্ড বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার ভোর ৫টা ৩৫ মিনিটের দিকে গাড়িটি গ্যারেজে প্রবেশ করে। এরপর থেকে সেটি বেজমেন্টের (ভূগর্ভস্থ) তৃতীয় তলার এক কোনায় পার্ক করা ছিল।

পুলিশ জানায়, হাসপাতালের বেজমেন্টের পার্কিংয়ে প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে গাড়িটি ছিল। নিহত দুই জনও ওই গাড়ির ভেতরেই ছিল। ফলে প্রচণ্ড গরমে তাদের মরদেহ অনেকটা পচে গেছে।

সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলের সিকিউরিটি ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, দুইজনের মধ্যে একজন চালকের আসনে, আরেকজন চালকের পেছনের আসনে ছিলেন। চালকের সিট পেছন দিকে হেলানো ছিল।

পুলিশের রমনা জোনের উপকমিশনার মাসুদ আলম জানিয়েছেন, গাড়ির মালিক সৌরভের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল এলাকায়। মৃত দুইজনের বাড়িও একই এলাকায়। তারা হাসপাতালে রোগী নিতে এসেছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রমনা জোনের উপকমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম বলেন, “সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রোগী জুবায়েরকে নিতেই তারা ঢাকায় আসেন। বরিবার সকালে হাসপাতালের সামনে প্রাইভেট কার থেকে নামেন গাড়ির মালিক সৌরভ ও নিহত মিজান। পরে তারা হাসপাতালের রিসিপশনে যান। আর গাড়িটি নিয়ে চালক জাকির ভোর সকাল ৫টা ৩২ মিনিটে বেজমেন্টের পার্কিংয়ের যান। পরে চালকের সহকারী মিজান ৬টা ১০ মিনিটে বেজমেন্টে থাকা গাড়িতে গিয়ে বসেন। এরপর থেকে তারা আর গাড়ি থেকে বের হওয়ার কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।”

ডিসি মো. মাসুদ আলম আরও বলেন, “গাড়ির মালিক সৌরভ জানিয়েছেন তিনি হাসপাতাল থেকে উত্তরায় একটি কাজে চলে যান। এদিকে তারা বেশি সকালে চলে আসায় রোগী জুবায়েরর সঙ্গে তাদের আর যোগাযোগ হয়নি। পরে সকাল ৯টার দিকে জুবায়ের গাড়ির মালিক সৌরভকে জানান তার অপারেশন হওয়ায় আরও দুই দিন হাসপাতালে থাকতে হবে। তাই তিনি চালক জাকিরকে ফোনে পাচ্ছিলেন না। বেজমেন্টের ইন্টারনেট দুর্বল থাকায় হয়তো ফোন যাচ্ছিল না বলে পুলিশকে জানিয়েছেন সৌরভ।”

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “হাসপাতালে ভর্তি রোগী জুরায়েরসহ তারা সবাই নোয়াখালী চাটখিলের বাসিন্দা। তবে, কেন তারা মারা গিয়েছেন বা তাদের কেউ হত্যা করেছে কিনা? এ বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”