এনসিপি ‘কিংস পার্টি’: টিআইবির নির্বাহী পরিচালক

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৪৭ পিএম
এনসিপি ‘কিংস পার্টি’: টিআইবির নির্বাহী পরিচালক
ছবি : সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে গঠিত হওয়া নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবির কার্যালয়ে ‘কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছর: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক দল বা কিংস পার্টি গঠন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, এই কিংস পার্টি বলতে আপনি কাদের বোঝাচ্ছেন? জবাবে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এটা গোপন করার কিছুই নেই। এটি জাতীয় নাগরিক পার্টি, তার সম্পর্কে বলা হয়েছে যে কিংস পার্টি। কারণ এর সঙ্গে সহযোদ্ধা বা সহযাত্রী হিসেবে যারা আছেন, তাদের মধ্যে দুজন সরকারে এখন আছেন। সে হিসেবে কিংস পার্টি।’

৫ আগস্টের পরবর্তী রাজনৈতিক যাত্রা অশুভ ছিল বলে মন্তব্য করেন ইফতেখারুজ্জামান। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘ওই দিন বিকেল থেকেই বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের একাংশ দলবাজি, চাঁদাবাজি, মামলা–বাণিজ্য শুরু করে এবং গত এক বছর ধরে তা আরও বেড়েছে। এমনকি দলের উচ্চপর্যায় থেকে ব্যবস্থা নিয়েও তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। এর ফলে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের জন্মলগ্ন থেকে একই রোল মডেল অনুসরণ করেছে। দখলবাজি, চাঁদাবাজির মধ্যে নিজেদের নিমজ্জিত করে আত্মঘাতী পথে অগ্রসর হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে ৪৭১টি রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতায় ১২১ জন নিহত এবং ৫১৮৯ জন আহত হয়েছেন। রাজনৈতিক সংঘাতের ৯২ শতাংশ ঘটনায় বিএনপি, ২২ শতাংশ আওয়ামী লীগ, ৫ শতাংশ জামায়েত ইসলাম এবং ১ শতাংশ এমসিপির সম্পৃক্ততার কথা জানায় টিআইবি।

টিআইবি তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক অভিযোগ উত্থাপন অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ রয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত রাজনৈতিক মামলা দায়ের (কর্তৃত্ববাদী সরকারের দোসর হিসেবে/ অভ্যুত্থানে হত্যার অভিযোগ); মব তৈরি, সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন, থানা ঘেরাও, বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।

এসব পর্যবেক্ষণের মন্তব্যে সংস্থাটি বলছে, কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে ঘাটতি রয়েছে। আধিপত্য প্রতিষ্ঠা দখলবাজি ও চাঁদাবাজি সংস্কৃতি অব্যাহত রয়েছে। দলগুলোর অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর না থাকা, কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারা একই সঙ্গে সরকারের পক্ষে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রশ্রয় দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে।

টিআইবি জানিয়েছে, ব্যক্তিস্বার্থের জন্য বিভিন্ন দলের কর্মীদের মধ্যে একাত্মতার ঘটনাও ঘটেছে।