১৮ মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা: ইউএনএইচসিআর


মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মুখে গত ১৮ মাসে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছেন।ফলে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে নতুন করে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এই তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারনে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন। ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। গত কয়েক মাসে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে। এসব শরণার্থীকে মানবিক সহায়তা দিতে কাজ করে যাচ্ছে ইউএনএইচসিআর ও অন্যান্য দাতা সংস্থা।
ইউএনএইচসিআর বলছে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে উদারভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। কক্সবাজারে মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটারে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। গত দেড় বছরে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা। ফলে এই এলাকাটি বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ স্থানের একটিতে পরিণত হয়েছে।
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশে নতুন করে প্রবেশ করা এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার জনের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এসব শরণার্থীর বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা মূলত সহায়তার ওপর নির্ভরশীল উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, নতুন করে শরণার্থী যোগ হওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে। যারা নিবন্ধিত শরণার্থী তাদের মানবিক সহায়তা দিচ্ছে দাতা সংস্থাগুলো। তবে, যারা নিবন্ধনের আওতায় আসেনি; তাদের কাছে খাবার, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রীসহ মৌলিক পরিষেবা পৌঁছানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকদের।
ইউএনএইচসিআরের শঙ্কা, বর্তমানে বৈশ্বিক সহায়তা তহবিল তীব্র সংকটের মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় নতুন শরণার্থী বৃদ্ধি পেলে জরুরি পরিষেবা শৃঙ্খল ভেঙে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। শিগগির অতিরিক্ত তহবিল নিশ্চিত না করা হলে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে এবং প্রয়োজনীয় রান্নার জ্বালানি (এলপিজি) ফুরিয়ে যাবে।
ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার শিশুর শিক্ষাসুবিধা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। আর এদের মধ্যে প্রায় ৬৩ হাজার নতুন করে বাংলাদেশে আসা শিশু।