নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে শাবিতে নারীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২২ মে ২০২৫, ০৮:২৭ পিএম
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে শাবিতে নারীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল ও নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নারী শিক্ষার্থীরা। এসময় নারী সংস্কার কমিশন ধর্ম ও জাতিসত্ত্বার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে স্বরূপ ইসলামিক কালচারাল অর্গানাইজেশনের ব্যানারে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

কর্মসূচিতে ‘নারী পুরুষ বাইনারি, এই শর্তেই দেশ গড়ি’, ‘যৌন কর্মী স্বীকৃতি দান, মায়ের জাতির অপমান’, ‘সম অধিকার নয়, চাই ন্যায্য অধিকার’, ‘নারী পুরুষ একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সহযোগী’, ‘পতিতাবৃত্তি কে না বলি’, ‘সমতার নামে নারীর বিকৃতি চলবে না’, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল চাই, অপসংস্কৃতি চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগান সংবলিত প্লেকার্ড দেখা যায়।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের নিন্দা জানিয়ে জান্নাতুল সুমাইয়া সাফি বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের পেশকৃত প্রস্তাবনার অধিকাংশই ইসলাম ধর্ম-জাতিসত্ত্বার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা নারীদের মর্যাদা খর্ব করে। স্বাধীনতার নামে কমিশন যে প্রস্তাবনা দিয়েছেন তা পরিবারিক কলহ আরও বাড়িয়ে তুলবে। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সম্মতির অভাবকে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে শাস্তির বিধান দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা দাম্পত্য সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে ও পারিবারিক অস্থিরতা বাড়বে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দিয়ে যৌনকর্মীদের শ্রমজীবী হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রদানের সুপারিশ প্রকৃতপক্ষে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের একটি ভয়ংকর ব্যবস্থা। ইসলাম ও সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে মানে না বরং তা নির্মূল করে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাই অবিলম্বে এসব প্রস্তাবনা বাতিল করতে হবে।’

‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রার’ সমালোচনা করে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আদিবা সালেহা বলেন, ‘মৈত্রী যাত্রায় অংশগ্রহণকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীর মধ্যে বাংলাদেশি সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীর উপস্থিতি নেই। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, অশালীন পোষাকে নারীর অধিকার আদায়ের নামে নারীর ভূষণকে খর্ব করা হয়েছে, ধর্মীয় শিষ্টাচারকে উগ্রবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে যা ধর্মীয় অবমাননা, ট্রান্স মুক্তিকে নারীমুক্তি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। যেখানে অধিকাংশ কার্যক্রম নারীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা এলজিবিটিকিউকে প্রমোট করছে। যা আমাদের মানব সম্প্রদায়ের জন্য একটা বিধ্বংসী মতবাদ। অথচ ট্রান্সজেন্ডার ধারণা বিকৃত মস্তিষ্ক থেকেই উদ্ভুত, মানবকল্যাণেই যার বৈধতা নয় বরং চিকিৎসার প্রয়োজন।’

এছাড়াও অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে ৪ দফা দাবিও তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। দাবি সমূহ হলো- নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও প্রতিবেদন অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে, ধর্ম, সংস্কৃতি ও জনমতকে অবজ্ঞা করে গঠিত বর্তমান কমিশন বাতিল করে ধর্মীয় ও সামাজিক বাস্তবতায় বিশ্বাসী এবং দেশের অধিকাংশ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন—এমন প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। পতিতাবৃত্তি নির্মূলের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও সংশ্লিষ্ট নারীদের মানবিক ও হালাল উপায়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে ধর্মীয় বিধানসমূহকে সংবিধানের আলোকে রক্ষা করে নারী উন্নয়নের একটি ভারসাম্যমূলক ও সমাজবান্ধব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।