ইশরাকের শপথ ইস্যুতে স্থানীয় সরকার বিভাগের বিজ্ঞপ্তি


বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার দাবিতে তার সমর্থকরা টানা পাঁচদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। সোমবার (১৯ মে) নগর ভবনে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ব্লকেড কর্মসূচি আয়োজন করেছেন তারা।
এ অবস্থায় রোববার (১৮ মে) স্থানীয় সরকার বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ইশরাকের বিষয়ে মন্ত্রণালয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে রিট আবেদনের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত আসার পর।
এতে বলা হয়, ইশরাক হোসেনের রায়ের বিষয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও অসংগতি তুলে ধরে এবং শপথ আয়োজন করা থেকে বিরত থাকতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ গত ২৮ এপ্রিল লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। এছাড়া মো. মামুনুর রশিদ নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের ২৭ মার্চের রায় ও ডিক্রি, নির্বাচন কমিশনের ২৭ এপ্রিল করা সংশোধিত গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন। ওই রিট মামলায় ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি আবেদন জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রতারণামূলক রায় দেয়ার জন্য নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয়ের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাইকোর্টে রিট মামলা বিচারাধীন অবস্থায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী এমন আন্দোলন আদালতের প্রতি অনাস্থা অথবা অবমাননার শামিল। নাগরিক সেবা ব্যাহত ও অচলাবস্থা দূর করতে আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগ উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। বিএনপির ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম মেয়র পদে তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি।
এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বুধবার থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা।
এদিকে ন্যায্যতার প্রশ্নে হলেও বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক। রোববার দুপুরে সময় সংবাদকে এ কথা বলেন তিনি।
ওমর ফারুক বলেন, ‘ন্যায্যতার প্রশ্নে হলেও ইশরাককে শপথ পড়াতে হবে। একই প্রক্রিয়া চট্টগ্রামের শাহাদাৎ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা দায়িত্ব পেলে তিনি পাবেন না কেন।’
আদালতের রায় নিয়ে ইচ্ছেকৃতভাবে জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ এই আইনজীবীর।
আরেক সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘ইশরাকের মেয়রের শপথের কোনো বাধা নেই। যেহেতু আদালতের রায়ের পর ইসি গেজেট প্রকাশ করেছে। স্বাধীন এই সংস্থা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ কারণে তাকে শপথ পড়াতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শপথ না পড়িয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আইনি পরামর্শ চাওয়ার নেপথ্যে ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজ শপথ পড়ানো। আদালতের রায়ের পরও শপথ না পড়ানো দুঃখজনক।’