শিশুদের কি কৃতজ্ঞতা শেখানো যায়


শিশুদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ হলো কৃতজ্ঞতা ও দয়াশীলতা। শিশুরা তাদের পরিবারের পাশাপাশি স্কুল, প্রতিবেশী ও বাইরের পরিবেশ থেকে বিভিন্ন জিনিস শেখে ও এভাবেই তৈরি হয় একটি শিশুর ব্যক্তিত্ব। তবে সঠিক পদ্ধতিতে অভিভাবকরা কৃতজ্ঞতা ও দয়াশীলতার মতো মূল্যবোধগুলো শিশুদের মনে গেঁথে দিতে পারেন।
প্রাথমিকভাবে এটি কঠিন মনে হলেও পরিকল্পনা ও নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে নিশ্চিতভাবেই শিশুদের মধ্যে এই গুণগুলো তৈরি করা সম্ভব। জেনে নিন কীভাবে শিশুদের আরও দয়ালু ও কৃতজ্ঞতাবোধ সম্পন্ন করে তোলা যায়-
১. তাদের জন্য রোল মডেল বা আদর্শ হয়ে উঠুন
শিশুরা আপনার কাছ থেকে শেখে এবং আপনার আচরণ অনুকরণ করতে খুব পটু। তাই তাদের জন্য একটি আদর্শ রোল মডেল হোন এবং এমন উদাহরণ দিন যা তারা নিজের জীবনে যোগ করতে পারে। যেমন, কারো সাহায্য নিলে ‘ধন্যবাদ’ বলা, অন্যের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা ইত্যাদি। এভাবে তারা ভালো মূল্যবোধ নিয়ে বড় হবে।
২. সহানুভূতি শেখান
কোনো বিষয় বুঝিয়ে বলার সময় শিশুকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনা বলুন। যেমন, কেউ যদি আপনার শিশুর কথায় কষ্ট পায়, তাহলে তাকে জিজ্ঞাসা করুন – ‘তারা কেন মন খারাপ করেছে বলে তুমি মনে করো?’ এভাবে চিন্তা করা শিখলে আপনার শিশুর মনে সহানুভূতি ও অন্যকে বোঝার অভ্যাস গড়ে উঠবে।
৩. প্রতিদিন কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অভ্যাস করান
পরিবারে সদস্যদের মধ্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার আচরণগুলো অন্তর্ভুক্ত করুন। কারো দ্বারা উপকৃত হলে তা স্বীকার করা ও ধন্যবাদ দেওয়ার অভ্যাস করুন।
৪. শিশুকে ঈশপের গল্পের মতো মূল্যবোধ সৃষ্টিকারী বই পড়তে দিন
শিশুদের জন্য গল্প বা বই পড়া একটি মজার ও কার্যকরী উপায়। তারা গল্পের চরিত্রগুলো অনুকরণ করতে চায় এবং নিজেদের কল্পনা করে। তাদের জন্য একটি শক্তিশালী রোল মডেল তৈরি করুন যিনি দয়ালু, সহানুভূতিশীল এবং সবার প্রিয়।
৫. শিশুর প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান
যখনই দেখবেন আপনার শিশু দয়াশীল আচরণ করছে, তাকে প্রশংসা করুন। যদি সে তার খেলনা অন্য কারো সঙ্গে শেয়ার করে, তাহলে তাকে জানান যে তার এই কাজটি আপনাকে গর্বিত করেছে। এই প্রশংসা তাকে আরও বেশি দয়াশীল হতে উৎসাহিত করবে।
শিশুদের কৃতজ্ঞতা ও দয়াশীলতা শেখাতে অভিভাবকের ভূমিকা সবচেয়ে শক্তিশালী হতে পারে। আপনার শিশুর সামনে অনুকরণীয় রোল মডেল হাজির করা তাই আপনারই দায়িত্ব।
সূত্র: টাইমস্ অব ইন্ডিয়া