ধর্ম অবমাননা : নর্থ সাউথের শিক্ষার্থী অপূর্ব পালকে ৫ দিনের রিমান্ড


ধর্ম অবমাননার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
গত ৯ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক চাঁদ মিয়া আসামি অপূর্বকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে পেতে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আসামির উপস্থিতিতে রিমান্ডের শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য করেন।
এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তার উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানি শুরু হয়।
শুনানি চলার সময় আসামি অপূর্ব পাল আদালতকে জানান, ঘটনার দিন কি হয়েছে, তার মনে নেই। তার সঙ্গে অদৃশ্য কিছু আছে বলে দাবি করেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, এ আসামি কোরআন অবমাননার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনার দিন ও ঘটনাস্থলে এই অবমাননার কথা স্বীকার করেছে। ঘটনাটি কারো ইন্ধনে বা কোনো সম্প্রদায়েরে উসকানিতে এবং দেশে নৈরাজ্য ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির জন্য হয়েছে কী না, তা জানতে অপূর্বকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে উদঘাটনের সম্ভাবনা রয়েছে। সেজন্য তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
এর আগে গত ৪ অক্টোবর মধ্যরাতে রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিন সকালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ওই শিক্ষার্থী কোরআন অবমাননা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালে প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়।
এ ঘটনার কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নিজেও তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ভিডিও আপলোড করেন। পরে রাতেই উত্তেজিত একদল শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা তার বাসার নিচে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অপূর্ব পালকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এরপর রাতেই তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক হাসমত আলী বাদী হয়ে মামলার দায়ের করেন। পরদিন এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে অপূর্বকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।