পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত:১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১৭ পিএম
পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ
ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার ভোরে শুরু হওয়া সংঘর্ষে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন বেসামরিক মানুষ ও সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ সীমান্তে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

আফগান তালেবান প্রশাসন জানিয়েছে, পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক জেলায় অন্তত ডজনখানেক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। তালেবান সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, বুধবার ভোরে পাকিস্তানের দিক থেকে ভারী অস্ত্র থেকে গোলাবর্ষণ শুরু হয়, যা কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী ছিল।

অন্যদিকে পাকিস্তান জানিয়েছে, আফগান সীমান্তের বিপরীতে বেলুচিস্তানের চামান জেলায় তালেবান বাহিনীর হামলায় তাদের চার জন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন। দেশটির সেনাবাহিনী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, স্পিন বোলদাকে পাকিস্তানের হামলার অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।

একই দিনে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওরাকজাই জেলায় সশস্ত্র সংঘর্ষে দেশটির ছয় জন আধা-সামরিক সদস্য নিহত হয়েছেন। আরও ছয় জন আহত হয়েছেন বলে দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন। অভিযানের সময় নয় জন জঙ্গিও নিহত হয়।

কর্মকর্তারা জানান, গত সপ্তাহে ওই অঞ্চলে এক জঙ্গি হামলায় ১১ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হওয়ার পর অভিযান চালানো হচ্ছিল।

সাম্প্রতিক উত্তেজনার সূত্রপাত হয় কয়েক দিন আগের ভয়াবহ সংঘর্ষের পর। যা ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বড় সীমান্ত সংঘর্ষ হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তজুড়ে দুই দেশের মধ্যে নিয়মিতই ছোটখাটো গোলাগুলির ঘটনা ঘটে থাকে।

সংঘর্ষের পর উভয় দেশই একাধিক সীমান্তচৌকি বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বাণিজ্য বন্ধ হয়ে পড়েছে এবং পণ্যবাহী শতাধিক ট্রাক সীমান্তে আটকে আছে। পাকিস্তানই আফগানিস্তানের প্রধান খাদ্য ও প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহকারী দেশ। ফলে এই অচলাবস্থা আফগান বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, আফগান ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হচ্ছে। পাকিস্তানের দাবি, তালেবান প্রশাসন তাদের দেশের ভেতরে অবস্থান নেওয়া জঙ্গিগোষ্ঠী দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

কিন্তু কাবুলের দাবি, পাকিস্তানি সেনারা সীমান্ত উত্তেজনা বাড়াতে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে এবং আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএসকে) গোষ্ঠীকে আশ্রয় দিচ্ছে।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, আইএসকে আফগান তালেবানের বিরোধী একটি গোষ্ঠী, যারা পাকিস্তানসহ আঞ্চলিক দেশগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।