ডোনাল্ড ট্রাম্পের নোবেল পাওয়া না পাওয়া নির্ধারণ করছেন যে পাঁচজন

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত:১০ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০৬ পিএম
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নোবেল পাওয়া না পাওয়া নির্ধারণ করছেন যে পাঁচজন

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। বাংলাদেশ সময় আজ বিকেল তিনটার দিকে নরওয়ের অসলোতে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে।

চলতি বছরের প্রায় শুরু থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার নিজেকে এই পুরস্কারের যোগ্য দাবি করেছেন। ফলে অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এবার শান্তিতে নোবেলজয়ীর নাম জানার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে অনেকের।

 
 

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে গত কয়েকদিন ধরে অনেকেই মন্তব্য করছেন, ‘প্রভাব খাটিয়ে হলেও এবার শান্তিতে নোবেল নেবেন ট্রাম্প।’ কিন্তু মনোনীত কেউ কি নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সিদ্ধান্তের ওপর প্রভাব ফেলতে পারেন, কারা আছেন এই কমিটিতে?

এ নিয়ে আজ শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা। এতে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির পাঁচ সদস্যের পরিচয় ও কয়েকজনের বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে।

 

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী বাছাইয়ের জন্য কমিটি গঠন করে দেয় নরওয়ের পার্লামেন্ট। সদস্যদের মেয়াদ থাকে ৬ বছর। মেয়াদ শেষে তারা আবার নির্বাচিত হতে পারেন। এই সদস্যরা নরওয়ের পার্লামেন্টের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করেন, তবে তারা নিজেরা পার্লামেন্টের সদস্য (বর্তমান) না। এই কমিটির সচিবের দায়িত্ব পালন করেন নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক।

বর্তমান কমিটির চেয়ারম্যান হলেন ইউরগেন ভাটনে ফ্রিডনেস (৪১)। বলা হচ্ছে তিনি নোবেল কমিটির ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান। নিয়োগ পান ২০২১ সালে। কর্মজীবনে তিনি মানবাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নরওয়ের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অসলে তুশে (৫১)। রক্ষণশীল হিসেবে বিবেচিত তুশে নোবেল কমিটিতে যোগদানের আগে নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের গবেষণা পরিচালক ছিলেন।

বাকি সদস্যদের মধ্যে আছেন ৭৫ বছর বয়সী অ্যান এঙ্গার। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি নার্সিং বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। পরে রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি নরওয়ের সেন্টার পার্টির সমর্থক। ৬৮ বছর বয়সী ক্রিস্টিন ক্লেমেট নরওয়ের কনজারভেটিভ পার্টির রাজনীতিবিদ। ৪৯ বছর বয়সী গ্রি লারসেন নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা ও মানবিক সংস্থা কেয়ার নরওয়ের প্রধান। লারসেন এর আগে ট্রাম্প প্রশাসনের বিদেশি সহায়তা ব্যয় কমানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন।

সদস্যরা কী বলছেন
বিবিসিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে ইউরগেন ভাটনে ফ্রিডনেসের বক্তব্য তুলে ধরেছে আল জাজিরা। ফ্রিডনেস বলেন, কমিটি চাপের কাছে নতি স্বীকার করে না এবং সবসময় স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি বছর আমরা হাজার হাজার চিঠি, ইমেইল, আবেদন পাই। তাই এমন প্রচারণা বা চাপ আসলে কোনো নতুন বিষয় নয়।

সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করেননি ফ্রিডনেস। তবে এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘গণতান্ত্রিক দেশগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার’ সমালোচনা করেছিলেন।

অ্যান এঙ্গার নোবেল শান্তি পুরস্কারের বিষয়ে নিজের পছন্দ নিয়ে কথা বলতে চাননি। আরেক সদস্য  ক্রিস্টিন ক্লেমেট গত মে মাসে লিখেছিলেন, ‘মাত্র ১০০ দিনের বেশি সময়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে (ট্রাম্প) আমেরিকান গণতন্ত্র ধ্বংসের পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। তিনি উদার ও নিয়মভিত্তিক বৈশ্বিক ব্যবস্থা ভাঙার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।’

অন্যদিকে, অসলে তুশে চলতি বছরের শুরুর দিকে ট্রাম্পের অভিষেক (প্রেসিডেন্ট) অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তবে, তিনি ট্রাম্পকে শান্তি পুরস্কারের জন্য সমর্থন করতে পারেন কি না- সে বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তিনি লবিং বা প্রভাব বিস্তারের যেকোনো প্রচেষ্টাকেও গুরুত্বহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।