গাজায় নিহত ছাড়াল ৬৪ হাজার ৯০০


ফিলিস্তিনের ছিটমহল ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ড গাজায় প্রতিদিনই যেন নতুন করে মৃত্যু নামছে। অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৪ হাজার ৯০৫ জনের প্রাণ গেছে। সোমবারও তিন ফিলিস্তিনি ক্ষুধা আর অনাহারে প্রাণ হারালেন।
সহায়তার আশায় এগিয়ে যাওয়া মানুষও মৃত্যুর মুখে পড়ছে প্রতিদিন। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত ৪৭ জনের বেশি। শুধু মে মাসের শেষ দিক থেকে এ পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে ২ হাজার ৪৯৭ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ।
ক্ষুধা যেন গাজার নতুন মৃত্যুদূত। গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে মারা গেছে আরও তিনজন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪২৫। এর মধ্যে রয়েছে ১৪৫ জন নিষ্পাপ শিশু।
চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ২৪ লাখ মানুষকে এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক দুর্ভিক্ষ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইপিসি ইতিমধ্যে উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষের ঘোষণা দিয়েছে। সতর্ক করেছে, সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এই দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়বে দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসেও। ইতিমধ্যে অনাহারে প্রাণ গেছে ১৪৭ জনের, যাঁদের মধ্যে ৩০টি শিশু।
চলতি বছরের শুরুর দিকে স্বল্পস্থায়ী একটি যুদ্ধবিরতি থাকলেও গত ১৮ মার্চ থেকে আবারও বোমা আর গুলিতে কেঁপে উঠছে গাজা। সেই সময়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে আরও ১২ হাজার ৩৫৪ জন, আহত প্রায় ৫৩ হাজার জন। ভেঙে গেছে জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ের আশা।
আন্তর্জাতিক আদালত ইতিমধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একই সঙ্গে চলছে গণহত্যার মামলাও।
মৃত্যুর এই মিছিল, ক্ষুধার হাহাকার আর ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা নিরীহ মানুষের আর্তনাদ যেন গোটা দুনিয়ার বিবেককে প্রশ্ন করছে—কোথায় মানবতা?