টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন: চীন থেকে ‘রহস্যময়’ বিমানের উড্ডয়ন, ইরানের কাছে গিয়ে রাডার থেকে ‘উধাও’!

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত:১৯ জুন ২০২৫, ০২:৫২ পিএম
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন: চীন থেকে ‘রহস্যময়’ বিমানের উড্ডয়ন, ইরানের কাছে গিয়ে রাডার থেকে ‘উধাও’!
ছবি : সংগৃহীত

ইসরাইল গেল শুক্রবার ইরানে হামলা চালানোর একদিন পর, একটি কার্গো বিমান চীন থেকে উড্ডয়ন করে। পরের দিন, আরও একটি বিমান উপকূলীয় শহর থেকে ছেড়ে যায়। তারপর সোমবার, তৃতীয় বিমানটি রওনা হয় সাংহাই থেকে।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, প্রতিটি বিমান উত্তর চীন ধরে পশ্চিম দিকে উড়েছিল। প্রথমে এগুলো কাজাখস্তান অতিক্রম করে, তারপর দক্ষিণে উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানে প্রবেশ করে – এবং এরপর ইরানের কাছাকাছি পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে বিমানগুলো রাডার থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ হয়ে যায়।

প্রতিবেদন মতে, ফ্লাইট পরিকল্পনা অনুযায়ী বিমানগুলোর চূড়ান্ত গন্তব্যস্থলের কথা বলা হয়েছিল লুক্সেমবার্গে। কিন্তু সেগুলো ইউরোপীয় আকাশের কাছে ওড়েনি বলেই মনে করা হচ্ছে, যা  রহস্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
 
এদিকে, ইসরাইলের সাথে ইরানের যুদ্ধ যখন তীব্র হচ্ছে, তখন চীন থেকে তেহরানের দিকে কী পাঠানো হতে পারে তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। 
  
বিমান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের বিমান (মালবাহী বোয়িং ৭৪৭) সাধারণত সামরিক সরঞ্জাম এবং অস্ত্র পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং সরকারি চুক্তির অধীনে উড্ডয়নের জন্য ভাড়া করা হয়। 
 
যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক এবং মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার সাথে চীনা সম্পর্ক-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আন্দ্রেয়া ঘিসেলি বলেন, ইরানকে সাহায্য করার জন্য চীন কিছু করতে পারে- এমন প্রত্যাশার কারণে এই বিমান নিয়ে প্রচুর আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।’
 
তার মতে, ‘বর্তমান শাসনব্যবস্থার (ইরানে) পতন একটি উল্লেখযোগ্য আঘাত হবে (চীনের জন্য) এবং মধ্যপ্রাচ্যে প্রচুর অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে। যা শেষ পর্যন্ত চীনের অর্থনৈতিক ও জ্বালানি স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করবে।’ 
  
তবে ইরান-ইসরাইল সংঘাতের এই মুহূর্তে, বেইজিং সম্ভবত সতর্কতার সাথেই এগোবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
 
ইসরাইলের ইনস্টিটিউট অব ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের চীন ও মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ টুভিয়া গেরিং বলেন, ‘যদিও চীনের প্রকাশ্যে তেহরানে প্রতিরক্ষা উপকরণ পাঠানোর সম্ভাবনা কম, তবুও এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া উচিত নয় এবং তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।’
 
টেলিগ্রাফ বলছে, স্বাধীনভাবে পরিদর্শন না করা হলে, কার্গো বিমানগুলোতে ঠিক কী বহন করা হয়েছে তা জানা সম্ভব নয়। যদিও প্রকাশিত ফ্লাইট তথ্যানুসারে, পরবর্তী ফ্লাইটগুলোতে, কিছু বিমান তুর্কমেনিস্তান-ইরান সীমান্তের একই এলাকা থেকে উড়ে গিয়ে লুক্সেমবার্গের দিকে রওনা হয়। 
 
লুক্সেমবার্গ-ভিত্তিক বিমান পরিচালনাকারী কোম্পানি কার্গোলাক্স জানিয়েছে, তাদের বিমানগুলো ইরানের আকাশসীমা ব্যবহার করে না। তবে তারা কী বহন করছিল, সে সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দেয়নি সংস্থাটি। 
  
সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ