রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনা ‘কোনোমতে’ জীবিত: জাতিসংঘ


জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকতা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক ‘ব্যাপক আকারে রাশিয়ার আক্রমণের নৃশংসতা বৃদ্ধি’র নিন্দা জানিয়ে বৃহস্পতিবার বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনায় আশা ‘কেবলমাত্র জীবিত’ আছে।
জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, সাম্প্রতিক আগ্রাসনের মুখে তিনি এক মাস আগে যে ‘সতর্ক আশা’ প্রকাশ করেছিলেন তা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।
‘ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মতে, ৩৫৫টি ড্রোনসহ, সোমবারের আক্রমণটি রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের ওপর সবচেয়ে বড় ড্রোন আক্রমণ ছিল’। ডিকার্লো আরো বলেছেন, ‘এটি আগের রাতের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।’
যুদ্ধবিরতির কোনো ঘোষণা না থাকা সত্ত্বেও, ডিকার্লো ১৬ মে ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনীয় এবং রুশ প্রতিনিধিদের বৈঠকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেছেন, ‘এটি উৎসাহব্যঞ্জক যে, পক্ষগুলো প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে বলে জানা গেছে।’রাশিয়ার প্রাণঘাতী আক্রমণ শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
ডিকার্লো বলেছেন, ‘চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ব্যাপক আক্রমণের ঢেউ এই যুদ্ধ কত দ্রুত নতুন ধ্বংসাত্মক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে তার একটি স্পষ্ট সতর্কীকরণ। আরো তীব্রতা কেবল বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ধ্বংসাত্মক ক্ষয়ক্ষতিই বাড়িয়ে তুলবে না বরং ইতোমধ্যেই চ্যালেঞ্জিং শান্তি প্রচেষ্টাকেও বিপন্ন করবে।’
ডিকার্লো বলেছেন, ‘পক্ষগুলো বসে আলোচনা করতে সক্ষম হবে এই আশা এখনও বেঁচে আছে, কিন্তু খুব কমই।’ মার্কিন প্রতিনিধি আরো বলেছেন, যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করা কারো স্বার্থে নয়।
ভারপ্রাপ্ত মার্কিন বিকল্প প্রতিনিধি জন কেলি বলেছেন, ‘যদি রাশিয়া এই বিপর্যয়কর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে আমাদের আলোচনার প্রচেষ্টা থেকে সরে আসার কথা বিবেচনা করতে হবে।’
‘রাশিয়ার ওপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা এখনও টেবিলে রয়েছে।’বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন জানিয়েছে, তারা আগামী সোমবার ইস্তাম্বুলে নতুন আলোচনার প্রস্তাবের বিষয়ে কিয়েভের সাড়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে সময়ক্ষেপণের অভিযোগকারী ইউক্রেন যেকোনো বৈঠকের আগে মস্কোর শর্ত চায়।
ডিকার্লো বলেছেন, ‘একটি ন্যায্য শান্তির পথে ফিরে আসার জন্য এখনই গুরুতর, প্রমাণযোগ্য এবং সৎ বিশ্বাসের প্রচেষ্টা প্রয়োজন। একটি পূর্ণ, তাৎক্ষণিক এবং নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি এমন একটি প্রচেষ্টা, যদি তা প্রাথমিক পর্যায়ের হয়’।
জাতিসংঘের মতে, একটি ‘ন্যায়সঙ্গত শান্তি’ ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করে।
‘একটি শান্তি প্রক্রিয়া সহজ হবে না, এবং এতে সময় লাগবে। তবে এটি অপেক্ষা করা উচিত নয়। বিশেষ করে ইউক্রেনের জনগণ অপেক্ষা করতে পারে না।’