গাজায় চিকিৎসক দম্পতির ১০ সন্তানের ৯ জনই নিহত!


ফিলিস্তিনের গাজার খান ইউনিস শহরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এক চিকিৎসক দম্পতির ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জন নিহত হয়েছেন।
মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর বলছে, ইসরায়েলি হামলায় বাড়িতে আগুন লেগে যাওয়ার খবরে দৌড়ে বাড়িতে যান আলা নাজ্জার। গিয়ে দেখেন তার পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। এ চিকিৎসকের স্বামী হামদি আল-নাজ্জার ও ১১ বছর বয়সী একমাত্র জীবিত সন্তান গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহত ৯টি শিশুর বয়স ৭ মাস থেকে ১২ বছরের মধ্যে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খালিল আল-দোকরান জানান, ‘ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা দুটি শিশুর মরদেহ উদ্ধারে তৎপরতা চলছে।’
তবে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘৯টি শহীদ শিশুর মরদেহ তারা উদ্ধার করেছেন। তাদের কারও কারও শরীর পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বাউরস বলেন, ‘হামদি আল-নাজ্জার তার স্ত্রীকে কর্মস্থলে পৌঁছে দিয়ে বাড়িতে ফেরার কয়েক মিনিট পরেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রয়েছেন।’
ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, ‘এই দম্পতির এগারো বছর বয়সী একটি ছেলেই কেবল জীবিত আছে। তার অবস্থাও গুরুতর।’
এদিকে সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড করছেন এমন ব্যক্তিদের হামলা করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এতে খান ইউনিস এলাকাকে ‘বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আইডিএফ বলছে, ‘ওই এলাকা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং নিরপেক্ষ বেসামরিক ব্যক্তিদের ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
শনিবার আরেক বিবৃতিতে একদিনেই শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
এদিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর থেকে ১৯ মাসে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৪৭ জন গাজাবাসী নিহত হয়েছেন।