ইরানের বন্দরে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩১ এএম
ইরানের বন্দরে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮
ছবি : সংগৃহীত

ইরানের বৃহত্তম বান্দার আব্বাস বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও সাত শতাধিক মানুষ। রোববার (২৭ এপ্রিল) দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।

ঘটনাস্থলে এখনো আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। গত শনিবার বন্দরের শাহিদ রাজায়ী অংশে এই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জানালার কাঁচ ভেঙে যায়, ধাতব কনটেইনারগুলো ছিন্নবিচ্ছিন্ন যায় এবং অনেক পণ্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়

ঘটনার সময় ওমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের তৃতীয় দফা পারমাণবিক আলোচনা চলছিল। বন্দরে মজুত রাসায়নিক পদার্থ বিস্ফোরণের জন্য দায়ী বলে ধারণা করা হলেও এখনো বিস্ফোরণের সঠিক কারণ স্পষ্ট হয়নি।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দাবি করা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের কঠিন জ্বালানি ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে সেই দাবি অস্বীকার করেছে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, এ ধরনের প্রতিবেদন ‘শত্রুর মনস্তাত্ত্বিক অপারেশনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ’ এবং বিস্ফোরণস্থলে কোনো সামরিক সরঞ্জাম ছিল না।

এদিকে, বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস ব্রিটিশ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান অ্যামব্রের বরাতে জানিয়েছে, গত মার্চ মাসে বন্দরে সোডিয়াম পারক্লোরেট আনা হয়েছিল, যা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জ্বালানির উপাদান। এর ভুল ব্যবস্থাপনা বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বলছে, জানুয়ারিতে চীন থেকে দুটি ইরানি জাহাজে এই রাসায়নিক আনা হয়েছিল, যা দিয়ে প্রায় ২৬০টি মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য জ্বালানি তৈরি করা সম্ভব।

ভয়াবহ পরিস্থিতি
রোববারও বিস্ফোরণস্থলের ওপর দিয়ে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায় মোচড়ানো ধাতব টুকরা ও ধ্বংসাবশেষ। বিকেলে ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান জানান, আগুন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং শাহিদ রাজায়ী অংশের যে অংশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, সেখানে বন্দর কার্যক্রম ফের শুরু হয়েছে।

ইরানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানায়, আহত ৭৫২ জনের মধ্যে ১৯০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সংস্থাটির এক মুখপাত্র শনিবার বলেছেন, শাহিদ রাজায়ী বন্দরে রাসায়নিক সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দুর্বলতার কারণেই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। তিনি জানান, আগে থেকেই এ ধরনের বিপদের আশঙ্কা নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।

সূত্র: রয়টার্স