গাজার হাসপাতালে ফের ইসরায়েলি হামলা, চিকিৎসক নিহত


গাজা উপত্যকার একটি ফিল্ড হাসপাতালের ফটকে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে প্রাণ হারিয়েছেন এক চিকিৎসক এবং আহত হয়েছেন আরও ৯ জন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) গাজার মুয়াসি এলাকার কুয়েতি ফিল্ড হাসাপাতালে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির মুখপাত্র সাবের মোহাম্মদ।
তিনি জানান, ‘আহতরা সবাই রোগী ও চিকিৎসক। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা সংকটজনক।’ সাবের বলেন, ‘এই এলাকায় হাজারো বাস্তুহারা ফিলিস্তিনি তাঁবু গেড়ে বাস করেন।
তবে এই হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
গত ১৮ মাসের যুদ্ধে গাজার বেশিরভাগ হাসপাতালই ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
এর আগে রবিবার (১৩ এপ্রিল) গাজার ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতাল বা আল-আহলি আরব ফিল্ড হাসপাতালটি ইসরায়েলের হামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্স রেসকিউ টিম জানিয়েছে, হামলায় হাসপাতালের অপারেশনের ভবন, অক্সিজেন স্টেশন ও নিবির পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি সেনারা জানায়, হামাসের একটি কমান্ডকে লক্ষ্য করে ওই হাসপাতালে বিমান হামলা চালিয়েছে সেনাবাহিনী। যদিও এই বক্তব্যের সমর্থনে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি তারা।
এদিকে, ইসরায়েলের চলমান হামলায় কারণে ইদান আলেকজান্ডার নামে এক জিম্মির পাহারার থাকা হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে জানান হামাসের এক মুখপাত্র। আলেকজান্ডারকে যে এলাকায় রাখা হয়েছিল ইসরায়েল সেখানে সরাসরি হামলা চালিয়েছে বলে জানান তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে চালানো ইসরায়েলি হামলায় এক হাজার ৬০০ বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় মোট প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজারের বেশি মানুষ। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
গাজায় চলমান এই ইসরায়েলি হামলায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। একদিকে খাদ্য, ঔষধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম কিংবা জ্বালানিসহ সব মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। অন্যদিকে অবিরাম বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
এই সংঘাত বন্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আরেকটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাঁখো। জিম্মিদের মুক্তি ও গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করানোর জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার প্রতি জোর দেন তিনি।
এর আগে, গত সপ্তাহে চলতি বছর জুনের মধ্যে একটি ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট। ফিলিস্তিনে সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবের আয়োজিত দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানে আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এর জবাবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছে, ‘ফ্রান্স যদি ফিলিস্তিনিকে স্বীকৃতি দেয়, সেটি হবে ‘সন্ত্রাসবাদের জন্য বড় পুরস্কার।’