ব্যয়বহুল ভ্রমণ করায় ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট বরখাস্ত


সংসদ বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট সারাম দাবিরিকে বরখাস্ত করেছের ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেসকিয়ান। শনিবার (৫ এপ্রিল) তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন।
সদ্যই সাবেক হওয়া ভাইস প্রেসিডেন্ট সারাম দাবিরি ও তার স্ত্রীর ঘোরাঘুরির কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। এসব ছবিতে দেখা গেছে তিনি ইরানি নতুন বর্ষের সময় আর্জেন্টিনা ও অ্যান্টার্টিকা মহাদেশে ঘুরতে গেছেন।
ইরান যখন অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তখন তার এমন ব্যয়বহুল ভ্রমণ সাধারণভাবে নেননি দেশটির সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হওয়ার পর আজ শনিবার তাকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। সরকারি এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেছেন, “যদি তিনি ব্যক্তিগত খরচেও ঘুরে থাকেন, কিন্তু আমাদের দেশের অনেক মানুষ দুরবস্থার মধ্যে বাস করেন এবং দেশের ওপর অর্থনৈতিক চাপ যখন অনেক প্রবল তখন তার এই ভ্রমণ কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।”
সামাজিক মাধ্যমে ছবিগুলো ভাইরাল হওয়ার পর বরখাস্ত হওয়া সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে কোনো কথা বলেননি। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বার্তাসংস্থা ইরনাকে তার দপ্তরের এক কর্মকর্তা গত ২৫ মার্চ বলেন, এ ছবিগুলো এ বছরের নয়। এগুলো গত বছরের। তিনি ওই সময় ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন না।
সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্টকে স্ত্রীসহ ‘প্ল্যানসিয়াস’ নামে একটি প্রমোদতরীর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ব্যয়বহুল এ জাহাজটি ২০০৯ সাল থেকে অ্যান্টার্টিকায় মানুষদের ঘুরিয়ে নিয়ে আসছে। যেটিতে চড়তে বর্তমানে একেকজনকে ৩ হাজার ৮৮৫ ইউরো খরচ করতে হয়। যা বাংলাদেশি অর্থে ৫ লাখ টাকার বেশি।
৬৪ বছর বয়সী সারাম দাবিরি পেশায় আগে একজন চিকিৎসক ছিলেন। এছাড়া তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের কাছের লোক হিসেবেও পরিচিত। গত বছরের আগস্টে তাকে নিজের সংসদ বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। ছবিগুলো ভাইরাল হওয়ার পর প্রেসিডেন্টের কাছের অন্য ব্যক্তিরা সারাম দাবিরিকে সরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
এদিকে এর আগে ২০২০ সালে অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এই সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট। যদিও পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে এ মামলা তুলে নেওয়া হয়।
ইরানের অনেক মানুষ দারিদ্রতার মধ্যে বাস করেন। দেশটিতে চারজনের একটি পরিবারের বর্তমান মাসিক আয় ২০০ ডলার। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ২৫ হাজার টাকার সমান।
সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল