দাবানলে জ্বলছে দক্ষিণ কোরিয়া, নিহত বেড়ে ১৮


ভয়াবহ দাবানলের কোপে পড়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। দাবানলের আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি; এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৮ জন, এছাড়া আরও অন্তত ১৯ জন আহত হওয়ার খবর মিলেছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৬ মার্চ) এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। নিহতদের মধ্যে ৪ ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাও রয়েছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সরকারি তথ্যমতে, দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্তত পাঁচটি এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন বলে জানানো হয়েছে। হতাহতের আশঙ্কা এড়াতে প্রায় ২৭ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সিউলের কর্মকর্তারা জানান, আগুন নির্বাপণে কাজ করার সময় দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের উইসিয়ং অঞ্চল একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। হেলিকপ্টারটি উদ্বারে কাজ চলছে বলে জানায় দক্ষিণ কোরিয়ার বন বিভাগ। হেলিকপ্টারটিতে পাইলট ছাড়া অন্য কোনো সদস্য ছিলেন না বলে ধারণা করছে তারা।
বিগত যেকোনো দাবানলের চেয়ে এবারের দাবানলের তীব্রতা অনেক বেশি বলে উল্লেখ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক সু। টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শুক্রবারের দাবানলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আগের তুলনায় অনেক বেশি।
দেশের জনগণকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। এরকম ভয়াবহতার অভিজ্ঞতা আমাদের আগে কখনো হয়নি। তাই আমাদের সমস্ত শক্তি ও সক্ষমতা দিয়ে এই দাবানল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে।’
দাবানল নিয়ন্ত্রণে দেশটির প্রায় ৪ হাজার ৬৫০ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ সেনাসদস্য, অন্যান্য কর্মী ও প্রায় ১৩০টি হেলিকপ্টার কাজ করছে বলে জানান প্রেসিডেন্ট হান।
তিনি আরও বলেন, প্রচণ্ড বাতাসের কারণে দাবানল নিয়ন্ত্রণে কর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন। তা সত্ত্বেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) অঞ্চলগুলোতে ৫ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এলাকাগুলোতে শুষ্ক বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ওই এলাকার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় সিউল কর্তৃপক্ষ।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দাবানলে আনদং, উইসিয়ং ও উলসান শহরে আগুনের তীব্রতা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। দাবানলে প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দিরসহ বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বাসিন্দাদের ভুলের কারণেই এই দাবানলের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করছেন কর্মকর্তারা। সম্ভাব্য কারণ হিসেবে সমাধি পরিষ্কারের জন্য ঘাসে আগুন দেওয়া বা ঢালাই কাজে উৎপন্ন স্ফুলিঙ্গের কথা উল্লেখ করেছেন তারা।