ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহতের দাবি ইসরাইলের


ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার জেরুজালেমসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠার পর এক দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র তারা প্রতিহত করেছে।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করার আগেই আইএএফ (ইসরাইল এয়ার ফোস) ধ্বংস করেছে।’ এর আগে ইসরাইলের বেশ কয়েকটি এলাকায় সাইরেন বাজানো হয়।
জেরুজালেম থেকে এএফপি’র সাংবাদিকরা শহরে বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর কথা নিশ্চিত করেছেন।
টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে, ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র অধিকৃত জাফা অঞ্চলের দক্ষিণে ইসরাইলি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে একটি ফিলিস্তিন ২ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
চলতি সপ্তাহে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নতুন করে হামলার পর হুতিরা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে হামলা আরো বাড়ানোর হুমকি দিয়েছিল।
সর্বশেষ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গাজার ওপর আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া এবং অবরোধ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলি নৌ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি এই হামলাগুলো অব্যাহত থাকবে।’
বৃহস্পতিবার, ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মধ্য ইসরাইলে সাইরেন বাজানোর পর তারা গাজা থেকে ছোড়া একটি প্রজেক্টাইলকে প্রতিহত করেছে এবং অন্য দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র জনবসতিহীন এলাকায় পড়েছে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা জানিয়েছে, তারা গাজায় ’বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা’ চালানোর প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইলের বাণিজ্যিক কেন্দ্র তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে।
বৃহস্পতিবারের শুরুতে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে। যা হুতি বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, এটি একটি ’হাইপারসোনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র’ ছিল যা ইসরাইলের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লক্ষ্য নিক্ষেপ করা হয়েছিল।
হুতিরা এক বিবৃতিতে আরো জানিয়েছে, তারা আবারও লোহিত সাগরে একটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরীকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। ইয়েমেনি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র হামলার পর এটি সর্বশেষ হামলা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর হুতিরা লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজলোকে লক্ষ্য করে ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে হামলা চালিয়েছিল।
জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে শুরু হওয়া ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতির সময় তারা হামলা স্থগিত রেখেছিল। কিন্তু শনিবার ইয়েমেনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ হামলার পর তারা আবারও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু করে।
গত মঙ্গলবার ভোরে গাজায় ইসরাইল নতুন করে প্রাণঘাতি হামলা শুরু করেছে। ওই হামলায় কমপক্ষে ৪১৩ জন নিহত এবং কয়েকশ’ বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছে।
অঞ্চলটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইসরাইলি নতুন আক্রমণে এখন পর্যন্ত দেড় হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ১৯০ জনেরও বেশি শিশু রয়েছে।