রংপুরে ৮ অ্যানথাক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৩ পিএম
রংপুরে ৮ অ্যানথাক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত

রংপুরের পীরগাছায় আট জন অ্যানথাক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) বিশেষজ্ঞরা আক্রান্তদের শনাক্ত করেন। এ ছাড়া মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের রোগী পাওয়া গেছে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে দুজন মারা গেছেন। সে সময় অ্যানথ্রাক্স রোগে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অর্ধশত ব্যক্তি আক্রান্ত হন। ঘটনাস্থল থেকে অসুস্থ গরুর মাংসের নমুনা পরীক্ষা করে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত করেছিল প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পরে আইইডিসিআরের একটি প্রতিনিধি দল গত ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর পীরগাছা সদর এবং পারুল ইউনিয়নের অ্যানথাক্সের উপসর্গ থাকা ১২ নারী-পুরুষের নমুনা সংগ্রহ করেছিল।

আইইডিসিআর সূত্র জানায়, পীরগাছার ১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮ জনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছে। ফ্রিজে রাখা গরুর মাংসে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু পাওয়া গেছে। অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছে, এমন একজন ছাগলের মাংসের সংস্পর্শে এসেছেন– এমন কথাও সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

 

স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রংপুরে অ্যানথ্রাক্সের তেমন সংক্রমণ ছিল না আগে। গরুর পাশাপাশি ছাগলের মাংসেরও অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু শনাক্ত হওয়ায় মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেনি, কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন এ রকম ২০ জন রোগীর তথ্য আছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুহাম্মদ তানভীর হাসনাত। তিনি বলেন, ‘সব মিলে ৫০ জন রোগীর তথ্য আমাদের কাছে আছে। কিছুদিন আগে আক্রান্ত এলাকায় মেডিক্যাল টিম গিয়েছিল, যারা আক্রান্ত, তারা যাতে শঙ্কিত না হন, এ জন্য সচেতন করতে। সেখানে ১৫-২০ জন রোগীর দেখা হয়েছে, যাদের ৯০ শতাংশ সুস্থ হয়েছেন।’

 

চিকিৎসকরা বলছেন, অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গবাদিপশুর শ্লেষ্মা, লালা, রক্ত, মাংস, হাড়, নাড়িভুঁড়ির সংস্পর্শে এলে মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। এ রোগ গবাদিপশু থেকে মানুষে ছড়ায়, তবে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। মানুষের শরীরে এ রোগের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে চামড়ায় ঘা সৃষ্টি হওয়া। এ জন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগকে গরু-ছাগলের প্রতিষেধক টিকা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।

রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, পীরগাছার পর কাউনিয়া ও মিঠাপুকুরেও একই ধরনের উপসর্গের রোগী পাওয়া গেছে। আরও আট রোগীর নমুনা আইইসিডিআরে পাঠানো হয়েছে। অসুস্থ গবাদিপশু জবাই ও অসুস্থ প্রাণীর মাংস না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পীরগাছার দেউতি, পূর্ব পারুল, আনন্দী ধনীরামসহ কয়েকটি গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত দুই মাসে অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে শতাধিক গবাদিপশু মারা গেছে।