কিছুটা উন্নতি হলেও আজও ‘মাঝারি’ ঢাকার বাতাস


রাতের বৃষ্টির পর আজ সকালে ঢাকার আবহাওয়া ছিল বেশ স্নিগ্ধ। সহনীয় তাপমাত্রা, মেঘলা আকাশ আর মৃদু ঠান্ডা বাতাস। সেই সঙ্গে ঢাকার বায়ুদুষণও আজ ‘মাঝারি’ পর্যায়ে রয়েছে। গতকালের তুলনায় আজ ঢাকার বাতাসের মানে খুব বেশি না হলেও উন্নতি হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিইআই স্কোর ছিল ৭৭। এই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ২০তম স্থানে রয়েছে ঢাকা। এই সময়ে ঢাকার বাতাসের মান দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের চেয়েও ভালো। শহরটির স্কোর ৭৯।
গতকাল একই সময়ে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৮৬। বায়ুমান সূচক অনুযায়ী দুদিনের বাতাসের মানই ‘মাঝারি’ পর্যায়ে রয়েছে। তবে আজ গতকালের থেকে কিছুটা উন্নতি হলেও খুব বেশি স্বাস্থ্যকর নয়।
এদিকে, দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আবারও শীর্ষ দশে চলে এসেছে ভারতের দিল্লি ও পাকিস্তানের লাহোর। অবশ্য একিউআই স্কোরের দিক থেকে ঢাকার মতোই দূষণের মাত্রা ‘মাঝারি’ পর্যায়ে রয়েছে। লাহোরের স্কোর ৯৯ এবং দিল্লির স্কোর ৯০।
একই সময়ে আজ আরও একবার শীর্ষ দূষিত বাতাসের শহর কঙ্গোর কিনশাসা। শহরটির একিউআই স্কোর ১৯১। এরপর ১৬২ ও ১৬০ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম জানান, ‘হিমালয় থেকে, আবার ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও চীনের একটি অংশ থেকে দূষণ বাংলাদেশে আসে। এতে পুরো বাংলাদেশের ওপর দূষণ ছড়িয়ে পড়ে। শীতকালে এটা বেশি আসে।’
ড. আবদুস সালাম বলেন, ‘পার্টিকেল যত ফাইনেস্ট (সূক্ষ্ম) হবে, তত বেশি সময় ধরে তা বাতাসে ভেসে বেড়াতে ও দ্রুত ভ্রমণ করতে পারবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শীতকালে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে এ দূষণ বাংলাদেশে আসে। বর্ষাকালে কিছু জিনিস বাংলাদেশ থেকে ভারতে যায়। বাংলাদেশে যদি ১০০ শতাংশ বায়ুদূষণ থাকে, তার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ আসে বাইরের দেশ থেকে।’