পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা শুরু বুধবার

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৩ জুন ২০২৫, ১১:৩৮ পিএম
পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা শুরু বুধবার

শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের মাঠে বুধবার (২৫ জুন) থেকে পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।
সোমবার (২৩ জুন) সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৫-এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, পরিবেশ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দেশের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং বনজ সম্পদের উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের বাস উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিতে নিরলসভাবে কাজ করছে।’
পরিবেশ সচেতনতামূলক কাজে জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা এবং জাতীয় বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৫ এর আয়োজন করা হয়েছে। আগামী বুধবার থেকে শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের মাঠে শুরু হতে যাচ্ছে পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা।
'প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনি সময়' শ্লোগানে এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবস এবং 'পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি' প্রতিপাদ্যে এবারের জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান পালন করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ২৫ জুন সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিতব্য উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
অনুষ্ঠানে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জাতীয় পুরস্কার ২০২৫, জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২৪, বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার ২০২৪ এবং সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের মাঝে লভ্যাংশের চেক বিতরণ করা হবে।
শেরেবাংলা নগরে অনুষ্ঠিতব্য পরিবেশ মেলা চলবে ২৫ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত এবং বৃক্ষমেলা চলবে ২৫ জুন থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ২০২৫ পর্যন্ত। প্রতিদিন মেলা চলবে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৯টা পর্যন্ত।

বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে পরিবেশ দিবসের তাৎপর্যভিত্তিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর হতে স্মরণিকা ও বুকলেট প্রকাশ করা হবে।
দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় এবং ঢাকা মহানগরীর ১০০টি এবং সকল জেলায় ২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করা হবে। পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে শিশু চিত্রাঙ্কন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিতর্ক ও স্লোগান প্রতিযোগিতা, পরিবেশ বিষয়ক সেমিনার এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের জন্য সচেতনতামূলক সেমিনার আয়োজন করা হচ্ছে।

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজনে করা হবে। এ উপলক্ষ্যে শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষের চারা বিতরণ করা হবে। ঢাকা মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে ব্যানার স্থাপন এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের মাধ্যমে খুদে বার্তা প্রেরণ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, দেশের বন, জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের বৃক্ষাচ্ছাদন মোট ভূমির ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হতে ২৫ শতাংশে এবং বনাচ্ছাদনের পরিমাণ ১৪ দশমিক ১ শতাংশ হতে ১৬ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ লক্ষ্যে, সরকার বনায়ন ও বন সংরক্ষণ, অবক্ষয়িত বন পুনরুদ্ধার এবং টেকসই বন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। বন সম্প্রসারণ এবং বন উজাড় ও অবক্ষয় রোধে ১৯৯৫-৯৬ হতে ২০২৩-২৪ আর্থিক সাল পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ২৬ হাজার ৮৪২ হেক্টর ব্লক এবং ৭২ হাজার ৫৮১ সিডলিং কি.মি. স্ট্রিপ বাগান সৃজন এবং ২০ কোটি ৬২ লাখ চারা বিতরণ ও রোপণ করা হয়েছে।

২০২৩-২৪ সাল পর্যন্ত সামাজিক বনায়নে সম্পৃক্ত ২ লাখ ৫০ হাজার ১২৮ জন সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীর মাঝে লভ্যাংশ হিসেবে ৫০৫ কোটি ৩৫ লাখ ৭ হাজার ৭২৩ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।