৪০ ভাষায় গান, ১২ বাদ্যযন্ত্রে পারদর্শী ছিলেন জুবিন গর্গ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:২২ পিএম
৪০ ভাষায় গান, ১২ বাদ্যযন্ত্রে পারদর্শী ছিলেন জুবিন গর্গ
ছবি : সংগৃহীত

৫২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ইন্ডিয়ার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গর্গ। কাজের সূত্রে সিঙ্গাপুরে অবস্থানকালে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। দ্রুত সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি তাকে। ৪০টিরও বেশি ভাষা ও উপভাষায় গান গেয়েছেন এই শিল্পী। এছাড়া ১২ বাদ্যযন্ত্রে পারদর্শী ছিলেন তিনি।

১৯৭২ সালের ১৮ নভেম্বর মেঘালয়ের তুরায় জন্মগ্রহণ করেন জুবিন বোরঠাকুর। পরে তিনি পারিবারিক গোত্রনাম থেকে গর্গ উপাধি গ্রহণ করেন। তার নামকরণ করা হয়েছিল বিশ্বখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক জুবিন মেহতার নাম অনুসারে।

শৈশব থেকেই সংগীতমুখর পরিবেশে বড় হন তিনি। তার বাবা মোহিনী মোহন বোরঠাকুর ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট, পাশাপাশি কবি ও গীতিকার। কপিল ঠাকুর নামে লিখতেন তিনি। মা ইলি বোরঠাকুরও ছিলেন সংগীতশিল্পী। তার বোন অভিনেত্রী ও গায়িকা জংকি বোরঠাকুর ২০০২ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। আরেক বোন ড. পাম বোরঠাকুরও সংগীতচর্চার সঙ্গে যুক্ত।

কেবল আঞ্চলিক গায়ক নন, জুবিন গর্গ সংগীতের ভুবনে নিজেকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। অসমিয়া, বাংলা, হিন্দি, নেপালি, তামিল, তেলেগু, মালায়ালাম, মারাঠি, ওড়িয়া, ইংরেজি ছাড়াও কার্বি, মিসিং, তিওয়ার মতো আদিবাসী ভাষাসহ ৪০টিরও বেশি ভাষা ও উপভাষায় গান গেয়েছেন তিনি।

শুধু কণ্ঠ নয়, বাদ্যযন্ত্র বাজানোতেও ছিল তার দারুণ দক্ষতা। তবলা, গিটার, ড্রাম, হারমোনিয়াম, দোতারা, ঢোল, ম্যান্ডোলিনসহ অন্তত ১২ ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন তিনি। বহুমুখী প্রতিভার কারণে জুবিন অসমের সর্বাধিক সম্মানিত ও সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া শিল্পীদের একজন হয়ে উঠেছিলেন।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি বাংলা, অসমিয়া ও হিন্দি সিনেমার জন্য অসংখ্য হিট গান উপহার দিয়েছেন। এর মধ্যে আছে বাংলা ছবির জনপ্রিয় গান ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’-এর ‘পিয়া রে...’, দেব অভিনীত ছবির ‘আয়না মন ভাঙা আয়না...’, ‘চোখের জলে ভাসিয়ে দিলাম’, ‘মন মানে না’, আবার বলিউড ছবির অমর গান ‘ইয়া আলি’। এসব গান আজও কোটি শ্রোতার হৃদয়ে বেঁচে আছে।

তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ, ২০২৪ সালে মেঘালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার (ডি.লিট.) ডিগ্রি পান তিনি। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।