পরীক্ষা না নিয়ে নম্বর দেওয়া ছিল অগ্রহণযোগ্য: শিক্ষা উপদেষ্টা

Bangla Post Desk
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১৪ পিএম
পরীক্ষা না নিয়ে নম্বর দেওয়া ছিল অগ্রহণযোগ্য: শিক্ষা উপদেষ্টা
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার। ছবি- সংগৃহীত

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেন, ‘শিক্ষার মান নিয়ে যে উদ্বেগ দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান, তা কাটাতে বাস্তবসম্মত ও নির্মোহ মূল্যায়ন ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।’

বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বিশেষ  অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা ও শিক্ষাবিদরা। শিক্ষা পরিবারের সদস্য, গবেষক ও নীতিনির্ধারকরা উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘অভিভাবক, শিক্ষক- সকলেই মানের অবনতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। বহু উদ্যোগ নেওয়া হলেও গ্রাসরুট পর্যায়ের বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলোকে আরও গভীরভাবে বুঝতে হবে।’

তিনি জানান, শিক্ষার মান উন্নয়নে যেসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং ভবিষ্যত নীতিমালার ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

অধ্যাপক আবরার জানান, বাংলাদেশের সেকেন্ডারি ও প্রাথমিক শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিংয়ে কোথায় অবস্থান করছে, তা জানতে সরকার এরমধ্যে একটি আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন কাঠামোর সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা হয়তো নিচের দিকেই থাকব—তাতে সমস্যা নেই। অন্ততপক্ষে জানবো আমরা কোথায় আছি, কী ঠিক করতে হবে।’

পূর্ববর্তী সময়ে ফলাফল প্রকাশের ভুল সিদ্ধান্তগুলোর সমালোচনা করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘পরীক্ষা না নিয়ে নম্বর দেওয়া ছিল অগ্রহণযোগ্য। এটি শিক্ষাব্যবস্থাকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল। আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছি।’

উপদেষ্টা আরও জানান, মূল্যায়নে দেখা গেছে—শিক্ষার্থীদের রিডিং ক্যাপাসিটি , গণিতে সক্ষমতা —উভয় ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য দুর্বলতা রয়েছে। এগুলোকে আরও বড় পরিসরে মূল্যায়ন করার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কোচিং, প্রাইভেট টিউশন ও গাইড বই প্রসঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোচিং বা গাইড বই বন্ধ হবে না। কেন এগুলোর চাহিদা তৈরি হচ্ছে—তা আগে বুঝতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কেন এগুলোর ওপর নির্ভরশীল, সেটাই মূল প্রশ্ন।’

প্রশাসনিক রাজনৈতিক প্রভাব দূর করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্কুল-কলেজের প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ শিক্ষাব্যবস্থায় বিপর্যয় এনেছে।

তিনি বলেন, এটি ঠিক করা এখন আমাদের সবচেয়ে জরুরি কাজগুলোর একটি।

শিক্ষা উপদেষ্টা জানান , প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার দুটি মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার সমন্বয় ভবিষ্যতে আরও কার্যকর হবে। কসরুজ্জামান আহমেদের নেতৃত্বে মাধ্যমিক শিক্ষার একটি বিস্তৃত মূল্যায়ন উদ্যোগ চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

গবেষকদের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গবেষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মন্ত্রণালয়ে এসে আমাদের আরও বিস্তারিত অবহিত করবেন। আমরা বিষয়টি অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে পর্যালোচনা করব।’

অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান।