ভোজ্য তেল-এলএনজি-সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনবে সরকার
স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে মসুর ডাল, খোলা সয়াবিন তেল, পাম অয়েল, এলএনজি, সার এবং ক্রুড ও পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম তেল কিনবে সরকার।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত পৃথক তিনটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যপুস্তক ছাপার অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্ট বলেন, ‘আমরা তাড়াতাড়ি প্রসেস করে, যৌক্তিক যে জিনিসগুলো ক্রয় করা প্রয়োজন সেগুলো অনুমোদন দিয়ে থাকি। আজকে আমরা বিভিন্ন ধরনের সার কেনার অনুমোদন দিয়েছি। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), মসুর ডাল ও সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আজকের বৈঠকে নবম, দশম শ্রেণির পাঠ্যবই মুদ্রণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পাঠ্যবই আমরা শিগগিরই চাচ্ছি। জানুয়ারির মধ্যে আমরা পাঠ্যবই করে ফেলতে বলেছি। চেষ্টা করবে, তবে জানুয়ারির মধ্যে হয়তো সবগুলো করে ফেলতে পারবে না।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, খোলাবাজারে বিক্রয় কর্মসূচির জন্য ১০ হাজার টন মসুর ডাল, ৩৮ লাখ ১০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল ও ১ লাখ ১০ হাজার লিটার পাম অয়েল কিনবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।
রাজশাহীর নাবিল নবা ফুডস লিমিটেড থেকে টিসিবির জন্য ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরা হয়েছে ৯৫ টাকা ৯৭ পয়সা। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
এছাড়া, স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে সয়াবিন তেল কেনা হবে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৪০ টাকা। ৩৮ লাখ ১০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল কিনতে মোট ব্যয় হবে ৫৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
টিসিবির জন্য পাম অয়েলও কেনা হবে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকেই। ১ কোটি ১০ লাখ লিটার খোলা পাম অয়েলের প্রতি লিটার ১৩০ টাকা দরে মোট ব্যয় হবে ১৪৩ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করবে বাংলাদেশ অয়েল গ্যাস অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম করপোরেশন- পেট্রোবাংলা।
৭০৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতিটি এমএমবিটিইউ ১৫.০২ ডলারে এলএনজি সরবরাহ করবে সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড।
এ ছাড়াও, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি (এডিএনওসি) থেকে ৫ হাজার ২০৮ কোটি ৩৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬ লাখ টন মুরবান ক্রুড পেট্রোলিয়াম (এএলসি) আমদানি করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
বৈঠকে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়েছে। ইউনিপেক সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড, ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, সিঙ্গাপুর অ্যান্ড কোং ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড, দুবাই’ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আমদানি করা পরোশোধিত পেট্রোলিয়ামের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭০ কোটি ১৬৪ লাখ টাকা। তবে প্রস্তাবে পেট্রোলিয়ামের পরিমাণের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
সৌদি আরবের এসএবিআইসি এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ২২৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানি করবে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ১০৪ কোটি ৩১ লাখ টাকায় জেএসসি ফরিন ইকোনমিক করপোরেশন ‘প্রোডিন্টর্গ’ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার, মরক্কোর ওসিপি থেকে ২৮০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার এবং মরোক্কা থেকে ২৫২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা মূল্যে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানি করবে।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের জন্য পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও সরবরাহের জন্য বিভিন্ন সরবরাহকারীকে চুক্তি প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।