মুক্তি পেলেন ৩৫ বিডিআর সদস্য
জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সাজাভোগ করা সাবেক ৩৫ জন বিডিআর সদস্য। গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে তারা পর্যায়ক্রমে মুক্তি লাভ করেন।
এ সময় কারাফটকের সামনে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২০ নভেম্বর ৫৩ জনের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। মুক্তিপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১ জন, কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে ২ জন এবং পার্ট-২ থেকে ৩২ জন রয়েছেন।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, জামিনের কাগজপত্র সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই শেষে সন্ধ্যায় তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার আল মামুন বলেন, আমাদের কারাগার-২ থেকে আজ ৩২ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছায়। পরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তাদের সন্ধ্যায় মুক্তি দেওয়া হয়।
সাবেক বিডিআর সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুনের বড় বোন কামরুন্নাহার বলেন, এক সময় ভাবতাম আদৌও ভাইকে পাব কিনা এমনটি মনে হচ্ছিল। আজকে ভাইকে সামনা-সামনি পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। এর পেছনে যারা কাজ করছে সহযোগিতা করছে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমার ভাইয়ের চিন্তায় বাবা মারা যান। মা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এখন মায়ের বুকে ছোট ভাইকে তুলে দিতে পারলে কিছুটা স্বস্তি পাব।
তিনি বলেন, ভেতরে যারা রয়েছেন তারাও যেন মুক্তি পায়।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
বিদ্রোহের ঘটনায় পরদিন ও ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি পৃথক মামলা হয়। হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ৮৫০ জনকে আসামি করা হয়, যা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা হিসেবে বিবেচিত।
এসব মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। বিপরীতে খালাস পান ২৭৮ জন।
