খুলনায় প্রতিরোধের মুখে উচ্ছেদ না করেই ফিরতে হলো প্রশাসনকে


খুলনার মুজগুন্নির বাস্তুহারা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের সময় বাসিন্দাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে ফিরে গেছে প্রশাসন। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে অভিযান শুরু হলে পুলিশের সাথে স্থানীয় বাসিন্দাদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে ১৪ পুলিশসহ অর্ধশত জন আহত হন। আহতদের মধ্যে সংবাদকর্মীরাও রয়েছেন।
জানা যায়, খুলনার মুজগুন্নির বাস্তুহারার ২ একর জায়গায় বাস করছেন প্রায় ২০০ পরিবার। তবে ১৯৮৭ সালে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ পাশের এই জায়গাটি লটারির মাধ্যমে প্লট আকারে বিক্রি করেন। ৩৫ বছর পার হলেও এখনও জায়গা বুঝে পাননি সেখানকার ৪২ প্লট মালিক।
এদিন সকালে বাস্তহারা কলোনির একটি অংশে প্লট মালিকদের জায়গা বুঝিয়ে দিতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। শুরু থেকেই টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে রাখেন বাসিন্দারা। সকাল ১০টার পর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় স্থানীয়রা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরে পুলিশ টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এ সময় উচ্ছেদ অভিযানে যাওয়া বুলডেজার গাড়ি ভেঙে দেয়া হয়।
স্থানীয়দের দাবি, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে তারা উচ্ছেদ করতে দিবে না।
তারা বলেন, এখানে ৩৩ একর জায়গা। মাঝখানে হাউজিং অফিস কিভাবে প্লট বানিয়ে মালিকদের কাছে বিক্রি করছে। এখানে বসবাসকারীরা রয়েছে, অথচ ৪২টি প্লট বানিয়ে কিভাবে বিক্রি করে। গত বছর ডিসেম্বরে জানানো হয়েছিল বাস্তহারা কলোনির একটা সেক্টর উচ্ছেদ করা হবে। এ ঘটনা নিয়ে আমরা ডিসি অফিসে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি, স্থগিত আছে। এরপর ৮-৯ মাস পর শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর মাইকিং করে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। আমরা এখানে দীর্ঘ ৪৫ বছর থাকি। এদেশের নাগরিক। যেখানে উচ্ছেদ করা হবে সেখানে ১৭০ পরিবারের আড়াই হাজার লোক আছে। সকালে ৪টি বুলডোজার নিয়ে আসে। আমরা বলেছি আমাদের কিছু আসবাবপত্র রয়েছে। আর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মিটিং আছে। মিটিংয়ে আমাদের যদি চলে যেতে বলে, যাব। কিন্ত তা না শুনে হঠাৎ করে লাঠি চার্জ, টিয়ারশেল এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। মুরব্বি, শিশু, নারী সবাইকে আঘাত করেছে। এসময় ৪০-৫০ জন আহত হয়। তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ বলছে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে আপাতত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রয়েছে।
খালিশপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীরা তাহার আলী বলেন, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আমরা উচ্ছেদ কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য যাই। এ সময় সরাতে গেলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। তারা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। তাদের হামলায় আমিসহ ১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।