কারাগারে 'ঈদ খাবার উদ্যোগে’ শিক্ষার্থীদের সহায়তা, বন্দীদের মুখে হাসি

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৮ জুন ২০২৫, ০৮:৪২ পিএম
কারাগারে 'ঈদ খাবার উদ্যোগে’ শিক্ষার্থীদের সহায়তা, বন্দীদের মুখে হাসি

ঈদের উৎসবের সময় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দীদের জন্য বাসায় তৈরি খাবার বিতরণে স্থানীয় স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশ নিয়েছেন। তবে উদ্যোগটি ব্যতিক্রম ও সহানুভূতিপূর্ণ।

কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদসহ বড় উৎসবগুলোতে আনন্দ ভাগাভাগি করতে বন্দিদের স্বজনরা বিশেষ খাবার নিয়ে আসেন। এসব খাবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সঠিকভাবে বিতরণ করা একটি সময়সাপেক্ষ ও শ্রমসাধ্য কাজ। এই প্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর করতে কারা রক্ষীদের সহায়তায় স্থানীয় শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা হয়েছে।

পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হওয়া এই উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষিত কারারক্ষীদের তত্ত্বাবধানে খাবার পরীক্ষা, পরিদর্শন ও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বিতরণে সহায়তা করছেন।

উদ্যোগে অংশ নেওয়া একজন কলেজছাত্র বলেন, ‘শুরুতে একটু ভয় লাগছিল, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এটি আমাদের সামাজিক ও মানবিক দায়িত্বের অংশ। বন্দিরাও মানুষ, তাদের জন্য কিছু করতে পারা গর্বের।’

তবে শিক্ষার্থীদের এ ধরনের সংবেদনশীল পরিবেশে যুক্ত করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কিছু মহল।

এ বিষয়ে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন ইউএনবিকে বলেন, শিক্ষার্থীরা কারাগারের বাইরে নিরাপদ এলাকায় কাজ করছেন এবং সব সময় নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে রয়েছেন। তারা শুধুমাত্র মানবিক সহায়তা দিচ্ছেন, কারা রক্ষীদের দায়িত্বে হস্তক্ষেপ করছেন না।

কারা মহাপরিদর্শক বলেন, এই প্রথম স্থানীয় শিক্ষার্থীরা এই ধরনের উদ্যোগে জড়িত হয়েছেন। যদি এটি সফল হয়, তাহলে দেশের অন্যান্য কারাগারেও এই মডেলটি প্রয়োগ করা যেতে পারে।

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি প্রিজন জাহাঙ্গীর কবির জানান, ঈদের দিন বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। এরপর রোববার থেকে তিন দিন ধরে স্বজনরা খাবার আনছেন। এই দীর্ঘ ও কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষামূলকভাবে যুক্ত করা হয়েছে। সফল হলে এটি অন্যান্য কারাগারেও চালু হতে পারে।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কেরাণীগঞ্জ কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, উদ্যোগটি চালু থাকবে কিনা- তা নির্ভর করবে এর ফলাফল ও নিরাপত্তা মূল্যায়নের ওপর। আপাতত এটি বন্দিদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে এবং যুব সমাজের মধ্যে মানবিক কাজে সম্পৃক্ততার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।

শিক্ষাবিদরাও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক সচেতনতা যেমন বাড়ে, তেমনি সহমর্মিতা ও দায়িত্ববোধও গড়ে ওঠে।