৪১ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা, গলে গেছে সড়কের পিচ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৯ মে ২০২৫, ১০:৪৮ পিএম
৪১ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা, গলে গেছে সড়কের পিচ

চুয়াডাঙ্গায় শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। শুক্রবার (৯ মে) বিকেল ৩টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল মাত্র ২৪%।

এর আগের দিন, বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরপর দুই দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার কারণে তীব্র গরমে জনজীবন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। প্রচণ্ড রোদের মধ্যে কাজে নেমে পড়া শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যানচালকরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। শহরের কোর্টরোড ও বড়বাজার সড়কে রোদের তাপে পিচ গলে যাওয়ার চিত্র দেখা গেছে।

চুয়াডাঙ্গা সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, “বিভিন্ন স্থানে সড়কের পিচ গলে যাওয়ার খবর পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট স্থানে বালু ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে যান চলাচলে সমস্যা না হয়। তবে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে সামান্য বিঘ্ন ঘটতে পারে।”

তীব্র গরমে চুয়াডাঙ্গার হাসপাতালগুলোতে হিট স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, “৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা অতিক্রম করলেই হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে। তাই অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বেশি করে পানি ও তরলজাতীয় খাবার খেতে বলা হচ্ছে।”

গরমে চুয়াডাঙ্গা শহরের একটি অলিগলিতে বাদাম বিক্রি করা এক ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী বলেন, “ভাজা বাদাম বিক্রি করে সংসার চলে। কিন্তু এই গরমে কেউ বের হচ্ছে না। দুই দিন কিছুটা সহনীয় থাকলেও আজ অতিরিক্ত গরমে বিক্রি প্রায় বন্ধ।”

একই অভিযোগ মুরগি খামারিদের। চুয়াডাঙ্গার এক খামারি বলেন, “তীব্র গরমে ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে। তার ওপর লোডশেডিংয়ের কারণে খামারের পরিবেশ আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। পোল্ট্রি, লেয়ার, সোনালি- সব জাতের মুরগি মারা যাচ্ছে।”

চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জামিনুর হক বলেন, “আজ চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা আগামী ১৩ মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে এবং আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”