অনশন না ভাঙায় শিক্ষার্থীদের পাশে মশারি টানিয়ে উপাচার্যের রাত্রিযাপন

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:১৮ পিএম
অনশন না ভাঙায় শিক্ষার্থীদের পাশে মশারি টানিয়ে উপাচার্যের রাত্রিযাপন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) অবকাঠামো উন্নয়নসহ তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন সাত জন শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন-১-এর নিচে অনশনে বসেন। এ সময় তাদের বুঝিয়ে অনশন থেকে সরাতে পারেননি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম। পরে তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের পাশে মশারি টানিয়ে রাত্রিযাপন করেন।

অনশনে বসা সাত শিক্ষার্থী হলেন- ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিলা জামান সেঁজুতি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের অমিয় মণ্ডল, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের তাজুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের মো. আবু বকর সিদ্দিক, দর্শন বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের পিয়াল হাসান, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের তামিম আহমেদ রিয়াজ ও আইন বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শওকত ওসমান স্বাক্ষর।

অনশনরত শিক্ষার্থী শওকত ওসমান স্বাক্ষর বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে যৌক্তিক তিন দাবিতে সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করছি।। দাবি মানার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে কোনও রকমের যোগাযোগ করেনি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আমরণ অনশনের মতো কঠিন কর্মসূচিতে গিয়েছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চলবে।’

আরেক শিক্ষার্থী তাইজুল ইসলাম তাজ বলেন, ‘আমরা ইউজিসির প্রতি আহ্বান জানিয়ে দুবার সংবাদ সম্মেলন করেছি। এমনকি ক্যাম্পাস-সংলগ্ন নির্মাণাধীন নভোথিয়েটার ও বিটাক ভবন দখল করি। তারপরও আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ পর্যন্ত করেনি।’

এ ব্যাপারে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. রাহাত হোসাইন ফয়সার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান। জমি অধিগ্রহণের নানা ধাপ এগোচ্ছে। আস্থার সংকটের কারণে অনশন পর্যন্ত পৌঁছেছে শিক্ষার্থীরা।’

প্রসঙ্গত, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, জমি অধিগ্রহণ ও শতভাগ পরিবহন নিশ্চিত করার দাবিতে টানা ৩৬ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তিন দফা দাবিতে গত ২৯ জুলাই মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ১৪ আগস্ট থেকে টানা এক সপ্তাহ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। দাবি পূরণের কোনও আশ্বাস না পেয়ে ২৪ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ দিন মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। ২৭ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন নির্মাণাধীন নভোথিয়েটার ও বিটাক ভবনে অ্যাকাডেমিক ও আবাসিক ভবনের ব্যানারও টাঙান তারা। পরে উপাচার্য অধ্যাপক তৌফিক আলমের আশ্বাসে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করা হলেও সময়সীমা শেষে ইউজিসি বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ না আসায় শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নামেন।