জিততে পারল না বার্সেলোনা

Bangla Post Desk
ইউএনবি
প্রকাশিত:১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:২৩ পিএম
জিততে পারল না বার্সেলোনা

এস্তাদিও কলিসেউম আলফনসো পেরেসে; বার্সেলোনার কাছে গত কয়েক বছর ধরেই এক দুঃস্বপ্নময় স্থান। সবশেষ ২০১৯ সালে এই মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফিরেছিলেন তৎকালীন বার্সা বস এর্নেস্তো ভালভের্দে। এরপর কেটে গেছে চারটি বছর।

এর মাঝে রোনাল্ড কুমান পারেননি, শাভি এরনান্দেসও কলিসিউম থেকে জয় নিয়ে ফিরতে পারেননি। এমনকি, গোল করা তো দূরের ব্যাপার, স্টেডিয়ামটিতে গত চার মৌসুমে গোলই করতে পারেনি বার্সেলোনা। এর মাঝে সবগুলো ম্যাচ গোলশুন্য ড্র করলেও হেরেছে একটিতে। এবার হান্সি ফ্লিকের অধীনে গোল করার অভিশাপ ভাঙলেও জয় নিয়ে ফিরতে পারল না কাতালানরা। পঞ্চম বছরে এসেও জয়বঞ্চিত থেকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ফ্লিকের শিষ্যদের।

লা লিগার ২০তম রাউন্ডের ম্যাচে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে স্বাগতিকদের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে বার্সেলোনা।

বার্সাকে প্রথমে গোল এনে দেন জুল কুন্দে। এরপর গেতাফেকে সমতায় ফেরান মাউরো আরামবারি।

এদিন গেতাফেকে চেপে ধরে ম্যাচের নবম মিনিটেই গোল আদায় করে নেয় বার্সেলোনা। বক্সের বেশ বাইরে থেকে গেতাফের বক্সে ঢুকতে থাকা কুন্দেকে চমৎকার একটি ক্রস উড়িয়ে দেন পেদ্রি। এরপর গোলরক্ষক বল ঠেকালেও আটকাতে ব্যর্থ হন, আর গোলমুখে বল পেয়েই তা জালে জড়িয়ে দেন কুন্দে।

এর ফলে স্প্যানিশ ফুটবল ক্যারিয়ারে প্রথমবার টানা দুই ম্যাচে গোলের দেখা পেলেন এই ফরাসি ফুলব্যাক। কোপা দেল রের ম্যাচে গত বুধবার বেতিসের বিপক্ষেও গোল করেছিলেন তিনি। তার আগের ম্যাচে সুপার কাপের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে ৫-২ গোলে হারানোর রাতে একটি অ্যাসিস্ট করেন কুন্দে। তাই সবশেষ তিন ম্যাচে তিনটি গোলে অবদান রাখলেন তিনি।

গোল খাওয়ার পর রক্ষণের খোলস ছেড়ে কিছুটা বেরিয়ে আসে গেতাফে। তবুও বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে একের পর এক আক্রমণ সাজাচ্ছিল বার্সেলোন। তবে ম্যাচের ৩৪তম মিনিটে বার্সা গোলরক্ষক ইনিয়াকি পেনিয়ার দুর্দান্ত একটি সেভ সত্ত্বেও সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।

সতীর্থের বল পেয়ে বক্সের মধ্যে ডান পাশ থেকে চমৎকার এক ভলিতে গোল করার চেষ্টা করেন কোবা দা কস্তা, তবে সেই শট পেনিয়া ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দিলেও তা কয়েক ইঞ্চি সামনে থাকা আরামবারির পায়ে লেগে গোল লাইন অতিক্রম করে। ফলে উল্লাসে মাতে ঘরের মাঠের সমর্থকরা।

সমতায় ফিরে ফের দশজনের রক্ষণ দেওয়াল তোলে গেতাফের খেলোয়াড়রা। বিরতির আগে অবশ্য অসাধারণ এক ক্রসে নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরি করেন রবের্ট লেভানডোভস্কি, তবে গোলমুখে থাকা কুন্দে ও রোনালদ আরাউহোর কেউ বলে স্পর্শ করতে না পারায় মাঠে মারা যায় সুযোগটি। ফলে ১-১ সমতায়ই বিরতিতে যেতে হয় কাতালান জায়ান্টদের।

বিরতির পর ফের মুহুর্মুহু আক্রমণে গেতাফের রক্ষণ দেওয়াল কাঁপিয়ে দেয় বার্সেলোনা। তবে কিছুতেই দলটির ডেডলক ভাঙত পারছিলেন না লামিন ইয়ামাল-রাফিনিয়ারা।

সময় অতিক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায় বার্সেলোনার আক্রমণের ধার। এর মাঝে কিছুক্ষণ পরপরই চকিতে আক্রমণে উঠে জয়সূক গোলটি পাওয়ার চেষ্টা করছিল গেতাফে।

ম্যাচ শেষের দশ মিনিটে গড়াতেই জেগে ওঠে দুই দল, উভয় পক্ষই গোল পাওয়ার চেষ্টা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৮১তম মিনিটে বক্সের বেশ বাইরে থেকে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন গেতাফে গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর লামিনের উড়ন্ত ক্রস দূরের পোস্টের কাছ থেকে কনভার্ট করতে ব্যর্থ হন রাফিনিয়া।

শেষ কয়েক মিনিটে আরও চাপ বাড়িয়েও হোসে বোরদালাসের লো-ব্লক ডিফেন্স ভাঙতে ব্যর্থ হয় বার্সেলোনা। ফলে ১-১ সমতায়ই শেষ হয় ম্যাচ।

এই লো-ব্লক অলআউট ডিফেন্স দিয়েই পাঁচ মৌসুম ধরে নিজেদের মাঠে অপরাজিত রয়েছে বোরদালাসের গেতাফে।

এর ফলে সুপার কাপ ও কোপা দেল রেতে দারুণ পারফর্ম করে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা জাগালেও লা লিগার ম্যাচে ফিরেই খেই হারাল বার্সেলোনা। আর লিগে গত আট ম্যাচে মাত্র এক জয়ে (৩ ড্র, ৪ হার) শিরোপার দৌড়ে আরও কিছুটা পেছনে পড়ে গেল তারা।

২০ ম্যাচ শেষে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানেই রইল ফ্লিকের দল। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৪৩। আগামীকাল রাতে লাস পালমাসের বিপক্ষে জিতলে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে আবারও টেবিলের শীর্ষে উঠবে তারা।

দিনের অপর ম্যাচে লেগানেসের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে শীর্ষস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে দিয়েগো সিমিওনের আতলেতিকো মাদ্রিদের। এই হারে রেকর্ড ১৫ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রা শেষ হয়েছে দলটির।