ইউরোপা-কনফারেন্স লিগে ইংলিশ ক্লাবগুলোর জয়জয়কার


চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে পিএসজির কাছে আর্সেনালের হারতে হলেও উয়েফার অপর দুই টুর্মামেন্টের শেষ চারে ভালো করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো। গত রাতে ইউরোপা লিগ ও কনফারেন্স লিগে খেলা তিন ইংলিশ ক্লাবের তিনটিই পেয়েছে বড় জয়ের দেখা।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিপক্ষের জন্য স্পেনের অন্যতম প্রতিকূল স্টেডিয়াম সান মামেসে খেলতে নেমেছিল চলতি মৌসুমে নিদারুণ ভুগতে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে মাঠে নেমেই পুরনো চেহারায় ফেরে দলটি। আর তাতে করে আথলেতিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে তুলে নেয় ৩-০ গোলের দারুণ এক জয়।
অথচ প্রিমিয়ার লিগে এই দলটিই সবশেষ পাঁচ ম্যাচ জয়বঞ্চিত। এই সময়ে মাত্র দুটি ম্যাচ ড্র করে দুই পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে রুবেন আমোরিমের দল।
বিলবাও ডিফেন্ডার দানি ভিভিয়ান ম্যাচের ৩৫ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে দশ জনের দলে পরিণত হয় এর্নেস্তো ভালভের্দের দল। তার পাঁচ মিনিট আগেই অবশ্য কাসেমিরোর গোলে এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। এরপর লাল কার্ডের ওই ফাউল থেকে পাওয়া পেনাল্টি গোলে পরিণত করে দলকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন ব্রুনো ফের্নান্দেস। বিরতিতে যাওয়ার আগে আরও একটি গোল করেন এই মিডফিল্ডার। দ্বিতীয়ার্ধে অল-আউট ডিফেন্স খেলে ইউনাইটেডকে আটকে রাখতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
এখানে ব্রুনো ফের্নান্দেসের কথা বিশেষ করে না বললেই নয়। দল মৌসুমজুড়ে ভুগতে থাকলেও একাই আলো ছড়িয়ে চলেছেন এই পর্তুগিজ। চলতি মৌসুমের সব মিলিয়ে ৫২ ম্যাচ খেলে ১৯ গোল ও ১৮ অ্যাসিস্টসহ মোট ৩৭ গোলে অবদান রেখে ফেলেছেন এরই মধ্যে।'
একই কথা বলা চলে টটেনহ্যাম হটস্পারকে নিয়েও। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড লিগ টেবিলের ১৪ নম্বরে থাকলে লন্ডনের এই ক্লাবটির অবস্থান আরও নিচে—১৬তম। লিগে সবশেষ আট ম্যাচে জয় মাত্র একটিতে, একটিতে ড্র; বাকি ছয়টিই হেরেছে পোস্তেকোগ্লুর শিষ্যরা। অথচ ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে উঠে সেখানেও দারুণ এক ম্যাচ উপহার দিয়েছে দলটি।
একই সময় অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচটি তারা জিতেছে ৩-১ ব্যবধানে। অবশ্য টটেনহ্যামের প্রতিপক্ষ ইউনাইটেডের মতো অতটা শক্তিশালী ছিল না। গত মৌসুমে নরওয়ের লিগ চ্যাম্পিয়ন বোদো/গ্লিমৎ এ মৌসুমে রয়েছে লিগ টেবিলের চারে। টটেনহ্যামের বিপক্ষে বলের দখলে কিছুটা এগিয়ে থাকলেও (৫৮ শতাংশ) আক্রমণে দলটির ধারকাছেও ছিল না তারা।
ম্যাচজুড়ে ২৪টি শট নেয় টটেনহ্যাম, যার সাতটি লক্ষ্যে রেখে তিন গোল আদায় করে নেন ব্রেনান জনসন, জেমস ম্যাডিসন ও ডমিনিক সোলাঙ্কে। অপরদিকে তিনটি শটের কেবল একটি লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয় বোদো/গ্লিমৎ, আর সেটি থেকেই মেলে তাদের একমাত্র গোলটি।
এছাড়া সুইডিশ ক্লাব ইউগোর্ডেনের বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয় তুলে ফাইনালে এক পা দিয়ে ফেলেছে চেলসি। এই ম্যাচটি ছিল উয়েফা কনফারেন্স লিগের।
ম্যাচের দুই অর্ধ দুটি করে গোল করে এনসো মারেসকার শিষ্যরা। ত্রয়োদশ মিনিটে জ্যাডন স্যানচোর গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর বিরতির দুই মিনিট আগে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ননি মাদুয়েকে। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ৫৯ ও ৬৫তম মিনিটে নিকোলাস জ্যাকসনের জোড়া গোলে বড় জয় নিশ্চিত করে সফরকারীরা।
আগামী সপ্তাহে ঘরের মাঠে ফিরতি লেগের ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে চেলসি ও ইউনাইটেড, আর টটেনহ্যাম যাবে সুইডেন। তবে বড় ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় ফাইনালে পৌঁছাতে তিন দলের কোনোটিরই খুব বেশি বেগ পাওয়ার কথা নয়।
তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে পিএসজির মাঠ থেকে আর্সেনাল জয় ছিনিয়ে আনতে পারবে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সবার। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে হেরে যাওয়ায় ওই এক গোলে পিছিয়ে থেকেই ফিরতি লেগে মাঠে নামবে মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা।