সৌদি আরবে হজ পালনে পৌঁছেছেন ১৫ লাখের বেশি হাজী

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৫ জুন ২০২৫, ০৫:২৯ পিএম
সৌদি আরবে হজ পালনে পৌঁছেছেন ১৫ লাখের বেশি হাজী

এ বছর হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ১৫ লাখেরও বেশি আন্তর্জাতিক হাজী। বুধবার (৪ জুন) দেশটির এক সরকারি মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম হলো হজ, যা শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জীবনে অন্তত একবার পালন করা ফরজ। এটি কিছু নির্দিষ্ট আনুষ্ঠানিকতা ও ইবাদতের সমন্বয়ে সম্পন্ন করতে হয়, যা জীবনে অন্তত একবার পালন করা আবশ্যক।

দেশটির হজ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঘাসসান আল-নুওয়াইমি জানান, এই সংখ্যাটি শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক হাজীদের জন্য প্রযোজ্য। দেশের ভেতরের হাজীদের সংখ্যা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। উল্লেখ্য, গত বছর সৌদি আরবের বাইরে থেকে মোট ১৬ লাখ ১১ হাজার ৩১০ জন হাজী এসেছিলেন।

বুধবার হাজীরা পায়ে হেঁটে আরাফাতে পৌঁছাতে শুরু করেন। কেউ কেউ নিজের মালপত্র নিজের কাঁধে বয়ে নিচ্ছেন, কেউবা বৃদ্ধ আত্মীয়কে সহায়তা করছেন প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও। এ সময় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে যায়। অনেকে মাঝপথে বিশ্রাম ও খাবার গ্রহণের জন্য থেমে যান।

আরাফাত মক্কার দক্ষিণ-পূর্বে একটি পাথুরে পাহাড়, যা ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই নবী মুহাম্মদ (সা.) বিদায় হজের সময় তাঁর শেষ খুতবা দিয়েছেন। কোরআনেও এই স্থানের উল্লেখ রয়েছে।

ইসলামী ঐতিহ্যে ‘আরাফাত দিবস’কে বছরের সবচেয়ে পবিত্র দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এদিন আল্লাহ বান্দার খুব কাছাকাছি আসেন এবং পাপ ক্ষমা করে দেন বলে বিশ্বাস করা হয়।

হাজীরা আরাফাতে থাকেন মধ্যরাত থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। এ সময় তারা ইবাদত ও বন্দেগিতে মনোনিবেশ করেন। বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর হাজীরা পাশের ময়দানে—মুজদালিফায় যান, যেখানে তারা পাথর সংগ্রহ করবেন জামারায় (শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ) অংশগ্রহণের জন্য।

প্রচণ্ড গরম ও বিপুল জনসমাগমে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হজ ব্যবস্থাপনায় অন্যতম চ্যালেঞ্জ। যদিও সৌদি সরকার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে নিরাপত্তা ও জনসমাগম ব্যবস্থাপনায়, তবুও প্রতি বছরই এটি কঠিন হয়ে পড়ছে।

এ প্রসঙ্গে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ বিন আব্দুর রহমান আল-জালাজেল বলেন, ‘গরম মোকাবিলায় ১০ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে, হাসপাতালের বিছানা সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং প্যারামেডিকের সংখ্যা তিনগুণ করা হয়েছে।’

সৌদি কর্তৃপক্ষের এসব পদক্ষেপ এবারের হজকে আরও নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।